বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate, ED রমেশ সোয়েন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। যাকে ওড়িশার সবচেয়ে বড় “প্রতারক” বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর রমেশের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সি রিমান্ডও চাইতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, রমেশ সোয়েনের নাম এর আগেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। ৬৬ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ২৭ বার বিয়ে করেছেন।
১০ টি রাজ্যে ২৭ জন মহিলাকে বিয়ে করা এবং তাঁদের লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করার জন্য ওড়িশা পুলিশ গত বছর সোয়েনকে গ্রেপ্তার করেছিল। পাশাপাশি, সোয়েনের সাথে তাঁর স্ত্রী, সৎ বোন ডাঃ কমলা শেঠি এবং ড্রাইভারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, তাঁরা সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।
মূলত, ২০১১ সালে রমেশের বিরুদ্ধে হায়দ্রাবাদে এমবিবিএস সিটের বিনিময়ে ২ কোটি টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে কেরালার বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে এক কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে। এমতাবস্থায়, ইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, তদন্তকারী সংস্থা রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এছাড়াও, রমেশ ও তাঁর নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নথিগুলিও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে পুলিশ গ্রেপ্তার করে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, আট মাস তল্লাশির পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মূলত, ২০২১ সালের মে মাসে দিল্লিতে বসবাসকারী রমেশের এক স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি ২০১৮ সালে একটি ম্যাট্রিমনি সাইটের মাধ্যমে রমেশের সাথে দেখা করেছিলেন। এদিকে, রমেশ তখন দাবি করেন যে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি বড় পদে কর্মরত রয়েছেন।
পাশাপাশি, রমেশের একাধিক বিয়ের প্রসঙ্গেও বিভিন্ন তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, রমেশের ভুবনেশ্বরে তিনটি ভাড়া বাড়ি ছিল। যেখানে তিনি একসঙ্গে তিনজন স্ত্রীকে রেখেছিলেন। তাঁর স্ত্রীরা পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, রমেশ স্ত্রীদের কাছ প্রথমে ঋণ চাইতেন এবং টাকা পাওয়ার পর তিনি ফের পরের স্ত্রীর খোঁজ করতেন।
১৯৮২ সালে প্রথমবার বিয়ে করেন: জানা গিয়েছে, রমেশ প্রথম বিয়ে করেছিলেন ১৯৮২ সালে। এরপর ২০০২ সালে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। এই বিয়ের পর তিনি ৫ সন্তানের পিতা হন। তারপর ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, তিনি ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের মাধ্যমে মহিলাদের সাথে বন্ধুত্ব করে একের পর এক বিয়ে করতে থাকেন। রমেশ প্রতিবারই নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দিতেন। পাশাপাশি, পেশায় শিক্ষিকা, আইনজীবী ও চিকিৎসক মহিলাদের নিজের জালে ফাঁসাতেন। তাঁর প্রথম দু’জন স্ত্রী ওড়িশার বাসিন্দা হলেও বাকিরা দিল্লি, পাঞ্জাব, আসাম, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে থাকতেন।