বাংলাহান্ট ডেস্কঃ এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ পুরভোট-এর প্রস্তাব ছিল রাজ্য সরকার-এর। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হলো না। তার আগেই দেশে করোনা সংক্রমন দেখা দেয়। আর সেই অবস্থায় দেশে জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্র। তাই ওই পরিস্থিতিতে পুরভোটের প্রচার ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। এরপরই সবকটি রাজনৈতিক দল পুরভোট বন্ধ করার পক্ষে সওয়াল খাড়া করে। তখন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর নির্বাচন কমিশনও পুরভোট স্থগিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর সংক্রমন ঠেকাতে দেশব্যাপী ২৫শে মার্চ থেকে দফায় দফায় লকডাউন (lockdown) শুরু হয়। দু-দফা পেরিয়ে এখন তৃতীয় দফায় লকডাউন ১৭ই মে পর্যন্ত মেয়াদ ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু এর মাঝেই পুরসভার মেয়র হিসেবে ফিরহাদ হাকিমের মেয়াদ ফুরচ্ছে। তাই কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে প্রথমবার প্রশাসক বসানো হচ্ছে রাজ্য-এ। করোনার জেরে পুরভোট নিয়ে যে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে তা থেকে নিষ্কৃতি পেতে শেষমেশ প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। আজই একথা জানান পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসক হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)। রিমুভ্যাল অফ ডিফিকাল্টিস অ্যাক্ট-এ ফিরহাদ হাকিমকেই প্রশাসক করা হচ্ছে। নবান্ন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার প্রশাসক বসাচ্ছে রাজ্য সরকার। করোনার জেরে পুরভোট স্থগিত হয়ে যাওয়ায় কলকাতা পুরসভার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দেয়। শেষমেশ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। আজই একথা জানান পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১৪ জনের প্রশাসক বোর্ড গঠন করা হবে। বর্তমান মেয়র সহ ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদরা সবাই থাকবেন সেই বোর্ডে। কাল-ই এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হবে। এককথায় করোনার জেরে নজিরবিহীর পরিস্থিতি এখন কলকাতা পুরসভায়। ৭ মে মেয়র হিসেবে ফিরহাদ হাকিমের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তারপরই ৮ মে থেকে বসবেন প্রশাসক। আর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন বর্তমান কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম-ই।
এদিকে প্রশাসক হিসেবে দিলীপ ঘোষের নাম চূড়ান্ত হতেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ফিরহাদ হাকিমকে নিয়ে এটা ওদের আগে থেকেই ভাবনা ছিল। এর আগে অনেক পুরসভা নির্বাচন করায়নি। এখন করোনার অজুহাতে এইসব করছে। ফিরহাদকে প্রশাসক করা খুব অন্যায় হল। আসলে নিজেদের দলের শাসন কায়েম রাখতে চায়। তাই ভোট করতে ওদের এত ভয়। আমরা আইনের সাহায্য নিতে পারি।”
প্রসঙ্গত, এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ পুরভোট হবে। এমনটাই প্রস্তাব করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু এরই মাঝে হানা দেয় করোনা। মারণ ভাইরাসের জেরে দেশজুড়ে ২৪ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এখনও জারি লকডাউন। দু দফা পেরিয়ে এখন তৃতীয় দফায় ১৭ মে পর্যন্ত জারি লকডাউন। আর এই করোনার জেরেই উলটপালট হয়ে গিয়েছে সব হিসেব। করোনার সংক্রমণ দেখা দিতেই দেশজুড়ে জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্র। সেই পরিস্থিতিতে পুরভোটের প্রচার ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
এরপরই সবকটি রাজনৈতিক দল পুরভোট স্থগিত করার পক্ষে সওয়াল করে। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর নির্বাচন কমিশনও পুরভোট স্থগিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। আর এরফলেই প্রশ্নচিহ্ন দেখা দেয় কলকাতা পুরসভার ভবিষ্যৎ নিয়ে। কারণ কলকাতা পুরসভার আইন অনুযায়ী প্রশাসক বসানো যায় না। শেষমেশ আজ মেয়র ফিরহাদ হাকিম-ই জানান, উদ্ভূত জরুরি পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক বসানোর পথেই হাঁটছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি আরও জানান, শুধু কলকাতা পুরসভা নয়, রাজ্যের আরও যে ৯৩টি পুরসভা, যেখানে ভোট হওয়ার কথা ছিল, সেখানেও প্রশাসক বসানো হবে।