বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেক বাবা-মায়ের কাছে তাঁদের সন্তানের থেকে বড় আর কিছু হতে পারেনা। সমস্ত দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেও সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে কোনো কিছুই বাদ রাখেন না অভিভাবকরা। কারণ, সন্তানের মধ্যেই নিজেদের পূর্ণতা লাভ করেন তাঁরা। কিন্তু, এমবতাবস্থায়, অনেকের সাথেই ভাগ্যের পরিহাসে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা সত্যিই মেনে নেওয়া কঠিন।
বাবা-মায়ের কাছে সন্তানের মৃত্যু শোক যে কতটা কষ্টকর তা ব্যক্ত করার ভাষা সত্যিই থাকেনা। এইরকমই অবর্ণনীয় বেদনার শিকার হতে হয় অনেককেই। ঠিক যেরকম এক দুর্ঘটনা ঘটেছে পাসুমকিঝির সাথেও। যিনি তাঁর ছেলেকে হারিয়ে ফেলেন চিরতরের জন্য। তবে, পাসুমকিঝি এক অনন্য উপায়ে যেন কাছে ফিরে পেয়েছেন তাঁর ছেলেকে! সন্তানের অনুপস্থিতি দূর করতে বাড়িতে এনেছেন ছেলের সিলিকনের মূর্তি।
তামিলনাড়ুর ওদ্দামচাতরামের বিনোভা নগরে বসবাসকারী পাসুমকিঝির জীবনে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০২০ সালে হঠাৎ তাঁর ছেলে পান্ডিদুরাই (এস. পান্ডিদুরাই) মারা যান। এদিকে, এই ঘটনার পরেই ৪২ বছর বয়সী পাসুমকিঝি ছেলের মৃতদেহ দেখে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। যে কোনো মূল্যেই ছেলেকে ফিরে পেতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও, তা সম্ভব ছিলনা।
পাসুমকিঝির ছেলে রবিবার মারা গিয়েছিলেন। তাই তিনি ছেলের মৃত্যুর ঠিক দুই বছর পর রবিবারই পাণ্ডিদুরাইর একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি বাড়িতে স্থাপন করেন। প্রকৃতপক্ষে, পাণ্ডিদুরাই সর্বদা চেয়েছিলেন যে তাঁর কান ছিদ্র করার আচারটি সম্পূর্ণ ধুমধাম করে সম্পন্ন করা হোক। কিন্তু তার আগেই তিনি মারা যান।
এমতাবস্থায়, পন্ডিদুরাইয়ের মা তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে ছেলের সিলিকন মূর্তি তৈরি করে রবিবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, পাসুমকিঝি পাণ্ডিদুরাইয়ের মুর্তিটিতে কান ছিদ্র করার আচারও পালন করেছিলেন। যেখানে তার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।
এই অনুষ্ঠানের জন্য পাসুমকিঝি গত দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ মারা যান পাণ্ডিদুরাই। এমতাবস্থায়, পাণ্ডিদুরাইয়ের মা ছেলেকে সিলিকনের মূর্তির মাধ্যমেই ফিরিয়ে আনেন। পাণ্ডিদুরাইয়ের মূর্তিকে রথে বসিয়ে অনুষ্ঠানের স্থানে নিয়ে আসা হয়। পাশাপাশি, মূর্তিটির কোলে বসিয়ে পাণ্ডিদুরাইয়ের ভাগ্নের কান ছিদ্র অনুষ্ঠানও সম্পন্ন করা হয়।
পাসুমকিঝি অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তিনি তাঁর ছেলের মূর্তিটি বসার ঘরে রাখবেন, যাতে ঘরে প্রবেশকারী ব্যক্তি পান্ডিদুরাইয়ের উপস্থিতি টের পান।তিনি বলেছেন যে, বাড়ির সমস্ত সদস্য বসার ঘরে বসে কথা বলে, তাই তাঁর ছেলের মূর্তিও একই জায়গায় উপস্থিত থাকবে।