গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানেই প্রসব বেদনা কনের, বিয়ের একদিন আগেই জন্ম দিলেন ফুটফুটে সন্তানের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিয়েবাড়ি বলে কথা! স্বভাবতই চারিদিকে ছিল সাজো সাজো রব। পাশাপাশি, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে চরম ব্যস্ততায় ছিলেন সকলেই। ভূরিভোজ, প্যান্ডেল, লাইট, সানাই, মাইকসহ খামতি ছিল না কোনো কিছুরই! তবে, এতকিছুর পরেও আর পাঁচটা বিয়েবাড়ির থেকে সম্পূর্ণ এক আলাদা বিয়ে বাড়ির সাক্ষী থাকল ছত্তিশগড়ের কোন্ডাগাঁওয়ের মানুষ।

তার কারণটা শুনলে চমকে উঠবেন আপনিও! বিয়ের মণ্ডপেই সন্তান প্রসব করলেন ভাবী পুত্রবধূ অর্থাৎ কনে। রীতিমতো চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় সাড়া পড়ে যায় সমগ্র এলাকায়। তবে, চমক এখানেই শেষ নয়! বরং সন্তান প্রসবের পর মহা ধুমধামে সম্পন্ন হয়েছে বিবাহের অনুষ্ঠানও। পাশাপাশি, নিজের পুত্রবধুকে সসম্মানে ঘরে তুলেছেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও।

   

অবাক করা এই ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের কোন্ডাগাঁও জেলার বাঁশকোট গ্রামে। জানা গিয়েছে ৩১ জানুয়ারি ছিল মূল বিবাহের অনুষ্ঠান। তার আগে রীতি অনুযায়ী গত ৩০ জানুয়ারি পাত্রপক্ষের বাড়ি থেকে পাঠানো হলুদ দিয়ে গায়ে হলুদের পর্ব চলছিল কনের বাড়িতে। ঠিক সেই সময়েই ওই মণ্ডপে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন পাত্রী শিববতী। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ফুটফুটে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন শিববতী।

এদিকে, এই ঘটনার পরে নিজের ভাবী পুত্রবধুকে আশীর্বাদ করতে ছুটে আসেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি ছত্তিশগড় ও ওড়িশা রাজ্যের সীমান্তবর্তী বদেরাজপুর ব্লকের বাঁশকোট গ্রামের বাসিন্দা চন্দম নেতাম নামে এক যুবকের সাথে বিবাহ ঠিক হয় ওড়িশার বাসিন্দা শিববতী নামে এক যুবতীর। সেই মতো গত ৩১ জানুয়ারি বিবাহের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে বলে কথাবার্তা পাকা হয় বর-কনে দু’পক্ষের মধ্যে।

এই প্রসঙ্গে চন্দন নেতামের বাবা ছেদিলাল নেতাম জানান, ‘‘পুত্রবধূর পুত্রসন্তান হওয়ায় ঘরে বিয়ের আনন্দ আরও দ্বিগুণ হয়েছে।’’ পাশাপাশি, নববধূর শাশুড়ি সরিতা মাণ্ডবী জানিয়েছেন, আজও ওই এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে পৃথু প্রথার প্রচলন রয়েছে।

wedding news

এই প্রথার নিয়ম অনুসারে, গত বছর জন্মাষ্টমীতে শিববতী প্রথম তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করেন। শ্বশুরবাড়িতে ছ’মাস অতিবাহিত করার পর নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন পাত্রী। তারপর পাত্র ও পাত্রী দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে বিবাহের দিন ও পাকাপাকি কথাবার্তা হয়।

এদিকে, পুত্রবধূর সঙ্গে নাতিকে পেয়ে আনন্দের সীমা নেই শ্বশুর-শাশুড়ি থেকে শুরু করে পরিবারের বাকি সদস্যদের। এমনকী, পুত্রসন্তানকে কোলে নিয়েই মহা ধুমধামে সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। এদিকে, এই খবর প্রকাশ্যে আসতে স্বভাবতই চমকে যান সকলে। পাশাপাশি, ক্রমশ ভাইরাল হওয়া এই খবরে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া দিতে থাকেন নেটিজেনরা। তবে, সমস্ত রীতিকে সম্মান জানিয়েই এই নবদম্পতি সহ নতুন অতিথির জন্যও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর