বাংলা হান্ট ডেস্ক: DA (Dearness Allowance) নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যেই সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ থেকেই গিয়েছে। তবে, ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ার পরেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সমর্থন না পাওয়ায় কার্যত আক্ষেপ প্রকাশ করলেন রাজ্যেরই মুখ্যমন্ত্রী। মূলত, ভোট বাক্সে সেটির ইতিবাচক পদক্ষেপ না পড়ায় মুখ্যমন্ত্রী হতাশ হয়েছেন।
পাশাপাশি, তিনি আক্ষেপের সুরে জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০,৬০০ কোটি টাকার বোঝা সরকার নিলেও সরকারি কর্মচারীরাই তাঁকে সমর্থন করেননি। তবে, এই প্রসঙ্গে তিনি একটি বড় ইঙ্গিতও দিয়েছেন। মূলত, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বক্তব্য থেকে এটুকু উপলব্ধি করা গেছে যে, সরকারি কর্মচারীদের সমর্থন না পেলেও তিনি যে সপ্তম বেতন কমিশন চালু করবেন না এমনটা কিন্তু নয়।
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক মনোভাব বজায় রেখেছেন। যদিও, ঠিক কবে থেকে এই বর্ধিত বেতনের বিষয়টি কার্যকর হবে, সেই বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে তিনি কিছু জানাননি। যদিও, সংশ্লিষ্ট মহল অনুমান করছে যে, লোকসভা নির্বাচনের পর্ব মিটে গেলেই এই বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে।
জানিয়ে রাখি যে, কর্নাটকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী, সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রাক্তন মুখ্যসচিব কে সুধাকর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটির তরফে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেসিক স্যালারি ২৭.৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব পেশ করা হয়। এমতাবস্থায়, রাজ্য সরকার যদি ওই কমিটির প্রস্তাব গ্রহণ করে নেয়, সেক্ষেত্রে পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছর রাজ্যের কোষাগার থেকে ১৭,৪৪০.১৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত বেরিয়ে যাবে।
এদিকে সূত্রের খবর অনুযায়ী চলতি অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২৪-২৫-এ রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে ৮০,৪৩৪ কোটি টাকা খরচ হবে। যার মধ্যে পেনশন দিতে রাজ্য সরকারের খরচ হবে ৩২,৩৫৫ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি ভর্তুকি দিতে সরকারের আরও ২৫,৯০৪ কোটি টাকা খরচ হবে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও সুদ বাবদ চলতি অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারকে গুনতে হবে আরও ৩৯,২৩৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আয়তনে জার্মানির সমান, ১০ বছরে ভারতে যুক্ত হয়েছে ৩১,০০০ কিমির রেলপথ! জানালেন রেলমন্ত্রী
যদিও, ঠিক এই আবহেই কর্ণাটকের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ অন্য একটি দাবি তুলেছেন। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, তাঁরা পুরনো পেনশন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করছেন। উল্লেখ্য যে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ২০০৬ সালের ১ এপ্রিল বা তারপরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, সেই কর্মচারীরা বর্তমানে নতুন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আছেন। এদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, পুরনো পেনশন ব্যবস্থা লাগু করা হলে চাপ বাড়বে রাজ্যের কোষাগারের ওপর। এমতাবস্থায়, সামগ্রিক বিষয়ের দিকে নজর রেখে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার অত্যন্ত সাবধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করার পথে হাঁটছে।