বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা নিয়ে জোর সংঘাতে পৌঁছাল কেন্দ্র এবং রাজ্যের। স্বরাষ্ট্রসচিব দফতর টুইট করে জানায়, রেল যে দাবি করছে তা সম্পূর্ণ অসত্য এবং বেঠিক। গত ৮ মে উল্লেখিত রাজ্যগুলি থেকে আসা অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য। সাংবাদিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Banerjee) জানান, আরও ১০টি ট্রেনের অনুমোদন করেছে রাজ্য। কেরলা, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, ব্যাঙ্গালুরু-সহ মূলত ভেলোরের রোগীর কথা ভেবে নয়া পরিকল্পিত ট্রেন আসার ব্যাপারে নানা সিডিউল তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্জাব, কর্ণাটকের সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রসচিব।
রাজ্যের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সমর্থন পাচ্ছে না কেন্দ্র। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো নিয়ে এই মর্মে চিঠি লিখে রাজ্যকে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার তিনি রাজের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ( Mamata Banerjee) একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে রাজ্যের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না।
শনিবার সকালে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে চিঠিতে একাধিক অভিযোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। পাল্টা জবাব দিতে ময়দানে নামে তৃণমূল বিগ্রেডও। এই সংঘাতের মাঝে টুইট করে বোমা ফাটায় রেলমন্ত্রক। পীয়ূষ গোয়েলের মন্ত্রক জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুরোধের পর এ দিন দুপুরে পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ু থেকে যথাক্রমে ২টি, কর্ণাটক থেকে ৩টি এবং তেলেঙ্গানা থেকে একটি ট্রেনের অনুমোদন করে পশ্চিমবঙ্গ। সেগুলি বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়। পাশাপাশি, অভিযোগ, মহারাষ্ট্র থেকে কোনও ট্রেন অনুমোদন করেনি। এখনও ৬টি ট্রেনের অনুমোদন বাকি রয়েছে।
রাজস্থানের অজমের থেকে একটি ট্রেন ডানকুনিতে এবং কেরল থেকে এক হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে অন্য একটি ট্রেন বহরমপুরে সম্প্রতি পৌঁছেছে— সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অমিত শাহের এই অভিযোগের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন অনলাইন সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন দাবি করেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যেই পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাত ও বেঙ্গালুরু থেকে পশ্চিমবঙ্গে ট্রেন আসছে।’’ অমিত শাহকে নিশানা করে ঝাঁঝালো সুরে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। আর কত নীচে নামবেন উনি?’’ এর পরই পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘লকডাউনের আগে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য চাল-ডালেরও ব্যবস্থা করা হয়নি।’’ শুক্রবার অওরঙ্গাবাদে ট্রেনের ধাক্কায় ১৬ জন শ্রমিকের মৃত্যুর দায় কার, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
রেলের এ হেন টুইটের পড়েই নড়েচড়ে বসে মমতার প্রশাসন। রাতেই কড়া জবাব দেওয়া রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব দফতর তরফে। জানানো হয়, রেল যে তথ্য দিচ্ছে তা সম্পূর্ণ অসত্য। পঞ্জাব, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকের উল্লেখিত ট্রেন গুলি গত ৮ মে অনুমোদন করে দেওয়া হয়েছে। এ দিন নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে, বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আশা করছি ট্রেনগুলি আসা নিয়ে শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করা হবে।