বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই রাজ্যে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Vande Bharat Express) সফর শুরু হয়ে গিয়েছে। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করছে ওই ট্রেন। এমতাবস্থায়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন যাতে হাওড়া স্টেশনে সহজেই ঢুকতে ও বেরোতে পারে সেই লক্ষ্যে স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মটিকে বিশেষ ভাবে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল (Indian Railways)। কিন্তু এবার কেন্দ্র বনাম রাজ্যের তরজায় রীতিমতো আটকে গিয়েছে হাওড়া স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম আধুনিকীকরণের ৪৩ কোটি টাকার প্রকল্প।
এই প্রসঙ্গে রেলের তরফে জানানো হয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ঢোকা ও বেরোনোর জন্য হাওড়া স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মটিকে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ১৮০ মিটার থাকলেও বন্দে ভারতের জন্য সেই দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে করা হবে ৬৩০ মিটার। এমতাবস্থায়, এই কাজ চলাকালীন হাওড়ার বঙ্কিম সেতুর অর্ধেক অংশে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার জন্য KMDA-র কাছে মাস ছয়েক আগেই আবেদন করলেও তার কোনো উত্তর না আসায় প্রকল্পটির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে রেল। যদিও, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে KMDA অবশ্য জানিয়েছে যে, বঙ্কিম সেতুর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধ রাখলে তীব্র যানজট তৈরি হবে। যার ফলে এই বিষয়টি নবান্নে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সম্মতি মিললেই রেলকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, রেলের “গতিশক্তি” প্রকল্পের আওতায় এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি “গতিশক্তি” প্রকল্পের চিফ প্রজেক্ট ম্যানেজার বিনোদ পাসওয়ান জানিয়েছেন যে, ‘‘এই প্ল্যাটফর্মটি এমন ভাবে তৈরি করা হবে, যেখানে যাত্রীদের জন্য যাবতীয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা উপলব্ধ থাকবে। তবে, প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়াতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, স্টেশনের দিল্লি-প্রান্তে ওই প্ল্যাটফর্মটি বঙ্কিম সেতু ছাড়িয়ে যাবে। যদিও, বঙ্কিম সেতুর ওই প্রান্তে রেলের বেশ কিছু বাতিল স্তম্ভ রয়েছে। এমতাবস্থায়, সেগুলি তুলতে গেলে ওই সেতুর নীচে ও উপরে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বসাতে হবে। আর ওই কারণেই সেতুর একাংশে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।’’
ইতিমধ্যেই বঙ্কিম সেতুর একটা অংশে ২৫ দিনের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে KMDA-কে চিঠি দিয়েছিল রেল। পাশাপাশি, বঙ্কিম সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে KMDA। তবে, দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ অপেক্ষা করার পরেও এক্ষেত্রে তাদের তরফে কোনো উত্তর মেলেনি বলে জানান বিনোদ পাসওয়ান।
এমতাবস্থায়, KMDA-র হাওড়া বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন ‘‘এর আগে বঙ্কিম সেতু মেরামত করার জন্য সেতুর অর্ধেকটা বন্ধ করতে চেয়ে KMDA নবান্নের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু, সেই অনুমতি KMDA-কেই দেওয়া হয়নি। তবে, আপাতত এই বিষয়টি বিবেচনার জন্য নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সম্মতি মিললেই কাজ শুরু করতে পারবে রেল।” পাশাপাশি, তিনি আরও জানান, বঙ্কিম সেতুর মতো গুরুত্বপূর্ণ সেতু অর্ধেকটা বন্ধ রাখলে যানজটের সমস্যা বাড়বে। তাই, বিষয়টির সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ভাবনাচিন্তা করায় সরকারের কিছুটা সময় লাগছে বলেও জানান তিনি। এমতাবস্থায়, আপাতত থমকে গিয়েছে প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ।