বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে বঙ্গে হাজারো প্রকার দুর্নীতির (Scam) রমরমা। কয়লা পাচার, গরু, পাচার থেকে শুরু করে স্কুল, পুরসভায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম রাজ্য। আর অবশ্যই রাজনীতি। তবে এই দুর্নীতির দৌড় যে শুধুমাত্র রাজ্য বা এ দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই তার কিছুটা আঁচ গত সপ্তাহেই দিয়েছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল, দুর্নীতির টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে এ রাজ্যের ‘প্রভাবশালী’ নেতার (Influential Leader) কাছ থেকে পৌঁছেছে তার রুশ ‘বান্ধবী’র (Russian girlfriend) কাছে। এরই মধ্যে এবার আরও বিস্ফোরক তথ্য নিয়ে হাজির গোয়েন্দা সংস্থা।
কেবল মাত্র ওই রুশ ‘বান্ধবীর’ কাছেই নয়, বরং ‘প্রভাবশালী’ নেতার দুর্নীতির টাকা পাচার হয়েছে অন্তত ১৫ জন বিদেশিনির অ্যাকাউন্টে। এ বার এই বিস্ফোরক দাবি ইডির। তবে গোয়েন্দাদের দাবি, তদন্তে উঠে এসেছে এই একজন প্রভাবশালীই নয়, এই একই পন্থা অবলম্বন করে বিদেশে বান্ধবীর কাছে টাকা রেখেছেন রাজ্যের অপর এক প্রভাবশালীও। সেই নিয়েও বিস্তারে খোঁজ চালাচ্ছে ইডি।
ইডি সূত্রে খবর, সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়ন থেকে ভেঙে তৈরী হওয়া ছোট ছোট দেশে এই ‘বান্ধবী’দের বসবাস। অধিকাংশ পেশায় ‘মডেল’। মূলত পাঁচতারা হোটেলে নাচ-গানের আসরে তাদের আনাগোনা। আর সেখানে আসা ধনী ব্যক্তিদের সাথেই এদের বেশ “বন্ধুত্ব” গড়ে ওঠে। আর এদের মধ্যেই অনেকে মোটা কমিশনের বিনিময়ে প্রভাবশালী, ধনী ব্যক্তিদের কালো টাকা রাখতে নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও নাকি ভাড়া দিয়ে দেন।
ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে যেই রুশ মডেলের খোঁজ পায় তারা সেই রাশিয়ার নাগরিক মডেলই অন্যান্য দেশের ওই রমণীদের সাথে ‘প্রভাবশালী’দের পরিচয়, যোগাযোগ করিয়ে দেন। এরপর তাদের মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের ওই মডেলদের অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে পড়ে টাকা। ইডি সূত্রে দাবি, ওই সমস্ত বিদেশিনির অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি ইতিমধ্যেই তাদের নাগালে এসেছে।
ইডি সূত্রে দাবি, মোটা কমিশনের বিনিময়ে নিজেদের অ্যাকাউন্ট ভাড়া দিতেন ওই বিদেশিনীরা। তবে অ্যাকাউন্টের পুরো নিয়ন্ত্রণ যেমন ডেবিট কার্ড, চেকবই, অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড, ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথি থাকে যিনি টাকা রাখছেন, তার দখলেই। তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, হাওয়ালার মাধ্যমে প্রথমে পাঠানো হয়েছে পশ্চিম এশিয়ার এক দেশে। তারপর ওই দেশে কয়েকটি ভুয়ো সংস্থা বানিয়ে তাতেই বিনিয়োগ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। খোলা হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তদন্তে নেমে সেইসব অ্যাকাউন্ট ঘেঁটেই রুশ মডেলের খোঁজ পায় ইডি। তার সূত্রেই উঠে আসে ওই বিদেশিনীদের অ্যাকাউন্টের বিষয়টি।
গোয়েন্দাদের দাবি, ২০১৮ থেকে ২০২০, এই সময়ের মধ্যে ওই প্রভাবশালী নেতাদের কোটি কোটি টাকা এভাবে মডেলদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। পরে চাল খাটিয়ে আবার ওই টাকার একাংশ ‘ফিরে এসে’ ঢুকেছে রাজ্যেরই কয়েকটি সংস্থায়। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে ইডির নজরে রয়েছে এক ‘প্রভাবশালী’র ‘ঘনিষ্ঠ’। তার বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বহু নথি পেয়েছে সিবিআই ও ইডি। খুব শীঘ্রই তাকে তলব করা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে খবর।