বাংলা হান্ট ডেস্ক: ১৯৮২ সালে বিহারের জামুই জেলার করমটিয়া গ্রাম প্রথমবারের জন্য উঠে আসে খবরের শিরোনামে। যদিও, হঠাৎ করে এই গ্রামের দিকে তাকালে অনুর্বর জমির পাশাপাশি, ধু ধু মাঠ নজরে আসবে। পাশাপাশি, অত্যন্ত রুক্ষ-শুষ্ক এলাকা হিসেবেও পরিগণিত হয় এটি। কিন্তু, এই অনুর্বরতার মাঝেই কার্যত লুকিয়ে আছে “খাজানা”!
কারণ, ওই অঞ্চলের মাটির নিচেই দেশের সর্ববৃহৎ সোনার খনি থাকার সম্ভাবনার কথা একাধিকবার উঠে এসেছে। আর যা সত্যি হলে কার্যত পাল্টে যেতে পারে সমগ্ৰ দেশেরই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। ১৯৮২ সালেই এই অঞ্চলে স্বর্ণখনির খবর সামনে এসেছিল। যদিও, সেই সময়ে প্রশাসন তাতে গুরুত্ব দেয়নি। বেশ কয়েক বছর পরে ফের ২০১১ সালে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে ওই এলাকায় খননকার্যের তোড়জোড় শুরু করা হয়।
কিন্তু, সেখানেও বাধ সাজে বিপুল খরচের পরিমান। এমনকি, একটা সময়ে এই পরিকল্পনা বন্ধও হয়ে যায়। তবে, ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় খনন মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী ফের একবার সংশ্লিষ্ট এলাকায় খননের তোড়জোড় শুরু করেন। শুধু তাই নয়, সংসদেও তিনি জানিয়ে দেন যে, বিহারেই দেশের সর্ববৃহৎ স্বর্ণখনি রয়েছে। পাশাপাশি, মন্ত্রী জানান, বিহারে সর্বমোট ২২২.৮৮৫ টন ধাতব সোনা আছে। অর্থাৎ, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যা কিনা গোটা দেশের ৪৪ শতাংশ সোনার সমান!
যদিও, তখনও কেন্দ্রের তরফে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিন্তু, এবার উদ্যোগী হয়েছে বিহার সরকার। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিহার সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে জামুইয়ে থাকা স্বর্ণখনির বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিহারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব হরজ্যোত কৌর বামরাহ জানিয়েছেন যে, বিহার সরকার এই খনির প্রাথমিক খোঁজের প্রক্রিয়াটিতে ছাড়পত্র প্রদান করেছে।
পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন যে, “আমরা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে এই বিষয়ে একটি MOU স্বাক্ষর করব। প্রাথমিকভাবে আমরা তৃতীয় স্তরের খোঁজ চালাবো। যেটা একেবারেই প্রাথমিক অন্বেষণ হবে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে মাসখানেকের মধ্যেই। তারপর দ্বিতীয় স্তরের খোঁজ শুরু হবে।”
এছাড়াও, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (GSI) এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ASI) দেওয়া তথ্য মেনেই করমাটিয়া, সোনো এবং ঝাঝা এলাকায় এই খোঁজ চালানো হবে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রত্নতত্ত্ববিদরা মনে করছেন যে, জামুইয়ের এই স্বর্ণখনিতে অন্তত ২২২.৮৮ মিলিয়ন টন স্বর্ণ আকরিক আছে।
যার মধ্যে উৎকৃষ্ট খনিজ সোনার পরিমান প্রায় ৩৭.৬ টন। এদিকে, এই বিপুল পরিমাণ আকরিক থেকে প্রচুর ধাতব সোনা তৈরি করা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে তৈরি হবে একাধিক উপজাত দ্রব্যও। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই বিপুল পরিমান সোনার হদিশ পেয়ে যাওয়ার পর সেটা যদি খোলা বাজারে আসে, সেক্ষেত্রে সোনার দাম একধাক্কায় অনেকটা কমে যেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।