বাংলাহান্ট ডেস্ক : কলকাতায় চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এমন অবস্থায় স্কুল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নতুন অবস্থান নিল অসম সরকার। অসমের ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকারি স্কুলে শিক্ষক পদ বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নতুন ভাবে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে অসমে।
সরকারি তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষক পদ অবলুপ্ত করা হচ্ছে। অসম সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই বিষয়টি নিয়ে অসম সরকারের সাফাই, চুক্তির ভিত্তিতে সর্বশিক্ষা অভিযানে বহু মানুষ শিক্ষক পদে কাজ করছেন। তাই স্থায়ী পদে নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা নেই।
অসম সরকারের শিক্ষামন্ত্রী রনোজ পেগু বলেছেন, নিম্ন ও উচ্চ প্রাথমিকে এই মুহূর্তে চুক্তির ভিত্তিতে ১১ হাজার ২০৬ জন কাজ করছেন। রাজ্য সরকার ২০২০ সালে স্থায়ী শিক্ষকদের মতই বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তাদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছে। ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত করা হয়েছে চাকরির মেয়াদকাল। তাই অর্থনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য ৮০০০ স্থায়ী পদ ফাঁকা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন অসম সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে। অসম জাতীয় পরিষদের সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈয়ের বক্তব্য, “স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষার স্কুলগুলির বিরুদ্ধে সরকারি চক্রান্ত এখন প্রাচীন হয়ে গেছে। এরকমভাবে হাজার হাজার স্থায়ী পদ বিলুপ্ত করা মোটেও সংবিধানের পরিপেক্ষ নয়। সরকারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়।”
পাশাপাশি, অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (এআইউইডিএফ) সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, “যুবসমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরিবর্তে, তাঁদের কাছ থেকে চাকরির সুযোগই কেড়ে নিচ্ছে বিজেপি সরকার। রাজ্যের স্কুলগুলির পরিস্থিতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। জাতীয় শিক্ষানীতির অনুপাত অনুযায়ী পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যায় ভারসাম্য থাকছে না। আরও নিয়োগ প্রয়োজন।”
তবে, ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রেই স্থায়ী শিক্ষকের পদ অবলুপ্তির জন্য সরকারি চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, রাজ্যের শিক্ষাসচিব বিজয়া চৌধুরির পক্ষ থেকে সেই সিদ্ধান্তের কথা অসমের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের কাছেও চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ফলে, তিনি স্থায়ীপদ বিলোপের নির্দেশ দিতেই নিম্ন প্রাথমিকে ৪,২৮৫ এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৩,৭১৫ শূন্যপদ বিলুপ্ত হচ্ছে।