ছেলের গলায় কামড় বসিয়েছে বাঘ! তুমুল লড়াই করে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে সন্তানকে বাঁচালেন বাবা

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: পেটের দায়েই জীবনকে বাজি রেখে মাছ-কাঁকড়া ধরতে যেতে হয় তাঁদের। যদিও, প্রতি মুহূর্তেই সেখানে থাকে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাতছানি। কিন্তু, তাও যে কোনো উপায় নেই! এমনকি, বড়সড় দুর্ঘটনার মুখেও পড়ে যান কেউ কেউ। তবুও, এভাবেই চলে আসছে দিনের পর দিন। অন্তত সুন্দরবনের (Sundarban) মৎস্যজীবীরা এভাবেই টিকে রয়েছেন কোনোমতে। এদিকে, মাছ কিংবা কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে তাঁদের মৃত্যুর খবর আমরা প্রায়শই শুনতে পাই। কিন্তু, বারংবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকে।

এমনকি, সম্প্রতি মাছ ধরতে গিয়ে ফের বাঘের মুখে পড়েছিলেন একদল মৎস্যজীবী। তবে, এবার খাদ্য-খাদকের লড়াইয়ে হেরে গিয়েছে দক্ষিণরায়। মূলত, সন্তানের ওপর বাঘকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন নি সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মৎস্যজীবী সূধন্য মণ্ডল। রীতিমতো, নিজের জীবনকে বাজি রেখেই বাঘের সাথে লড়াই শুরু করেন তিনি। আর এভাবেই নিজে ক্ষতবিক্ষত হলেও কোনোমতে সন্তানকে বাঁচিয়ে নেন সূধন্য।

জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের গাঁড়াল নদীর ছোট হেতালবেড়িয়া জঙ্গলের খাঁড়িতে। সেখানে বাবার সঙ্গে জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন দুই ছেলে গোবিন্দ ও সনাতন। খাঁড়ির জলে কাঁকড়া ধরার সময়েই সাক্ষাৎ মৃত্যুর সম্মুখীন হন তাঁরা। এমনকি, ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বাঘ আক্রমনও করে সূধন্যর ছোট ছেলে সনাতনকে।

তাঁর গলায় কামড় বসিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। আর তখনই বাঘটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন সূধন্য। নৌকার বৈঠা দিয়েই বাঘের সঙ্গে তুমুল লড়াই শুরু হয়ে যায় তাঁর। এদিকে, ভাই এবং বাবাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন বড় ছেলে গোবিন্দও। বাঘে-মানুষের এই লড়াইতে মরিয়া হয়ে ওঠে দু’পক্ষই। যদিও, সন্তানস্নেহের কাছে হার মানতে বাধ্য হয় দক্ষিণরায়।

একটা সময়ে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শিকার ছেড়ে সটান জঙ্গলে পালিয়ে যায় বাঘটি। এদিকে, রক্তাক্ত অবস্থায় কোনোমতে সনাতনকে নিয়ে নৌকায় করে গ্রামের ফিরে আসেন সূধন্য ও গোবিন্দ। সেখানেই সনাতনকে একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এদিকে, গুরুতর আহত হয়েছেন সূধন্যও। এমতাবস্থায়, এই ঘটনার খবর পেয়েই আক্রান্ত মৎস্যজীবীদের কাছে মাছ ও কাঁকড়া ধরার জন্য কোনো বৈধ অনুমতি পত্র ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে বনদফতর।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X