বাবা মাছ বিক্রেতা মা পরিচারিকার কাজ করেন, মাধ্যমিকে ৬৩১ পেয়ে তাক লাগাল শিলিগুড়ির কন্যা

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ যেখানে প্রবেশ করেছে দারিদ্রতা, দিন দিন খাওয়া অবস্থা যাদের। ছোট বেলা থেকে আর্থিক অনটন যাদের সঙ্গী। তাদের ঘরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৩১ নম্বর পেয়ে আশার আলো জ্বলল ঘরে। ঘটনাটি শিলিগুড়ির (Siliguri)।

জানা গিয়েছে, সারাদিন বাবা ঘুরে ঘুরে মাছ বিক্রি করেন। মা করেন পরিচারিকার কাজ। তবুও মাঝেমধ্যেই থমকে যায় সংসারের চাকাটা। ছোট থেকেই তাই কাজে নেমে পড়ে ভাইও। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল শিলিগুড়ির কাছে উত্তর একটিয়াশালের রীতা হালদার।

lo p

রেজাল্ট বেরোতেই অবাক হলেন সবাই। শিলিগুড়ির হায়দরপাড়ার বুদ্ধভারতী হাইস্কুলের ছাত্রী রীতা পেয়েছে মোট ৬৩১ নম্বর। বাংলায় ৯০, ইংরেজিতে ৯০, অঙ্কে ৯১, ভৌতবিজ্ঞানে ৮৫, জীবনবিজ্ঞানে ৯০, ইতিহাসে ৯৩ এবং ভূগোলে ৯২। নিজের স্কুলে সেই ফার্স্ট।

সংসারের দারিদ্রতা দেখে হাল ধরতে শেষমেষ ভাই সনাতনও পড়াশোনা ছেড়ে আয়ের রাস্তা ধরেন। তবে রীতার এরমধ্যেও নিজের রাস্তা থেকে সরে আসেনি। মেয়ের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে তাঁকে উৎসাহ জুগিয়েছে গোটা পরিবারই। তাই তার এই সাফল্যে খুশি স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষিকা থেকে শুরু করে পাড়া–প্রতিবেশী সবাই।

তাই এমন সাফল্যের জন্য গোটা পরিবারের পাশাপাশি স্কুল শিক্ষক এবং প্রাইভেট টিউটরদের অবদানের কথা বারবার জানিয়েছে সে। রীতার কথায় ‘‌‘ইংরেজি আমার পছন্দের বিষয়। ভবিষ্যতে কলা বিভাগে পড়াশোনা করে আমি শিক্ষিকা হতে চাই।’‌’
exam students wikimedia

ছাত্রীর সাফল্যে দারুণ খুশি স্কুলের প্রধানশিক্ষক স্বপনেন্দু নন্দী বলেন, ‘‘‌আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রীতার সাফল্যে গর্বিত গোটা স্কুল। তাঁকে অনুসরণ করবে অন্যান্য অভাবী মেধাবীরাও। ইচ্ছে থাকলেই যে উপায় হয় দেখিয়ে দিয়েছে রীতা।’’‌

মেয়ের সাফল্যে গর্বিত বাবা-মা। কিন্তু একইসঙ্গে দুর্ভাবনাও গ্রাস করেছে তাঁদের। গীতা হালদার বলেন, ‘‘‌মেয়ে অনেকদূর পড়তে চায়। হয়তো সে পথেই যাবে ও। কিন্তু ওর উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভার কী করে চালাব বুঝতে পারছি না।’‌’ তবু চেষ্টা চালিয়ে যাব।

সম্পর্কিত খবর