সূর্যে তুমুল ঝড়, ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণও! ঝলসে যাচ্ছে শুক্র গ্রহ! পৃথিবীরও প্রভাবিত হওয়ার তুমুল আশঙ্কা

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ফের অশান্ত হয়েছে সূর্য। শুধু তাই নয়, এবার তৈরি হয়েছে ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ও (Solar Storm)। ইতিমধ্যেই সূর্যের করোনা অশান্ত হয়ে পড়ায় সৌরঝড়ের প্রভাবে চলছে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। যে বিস্ফোরণ থেকে ছিটকে আসা আগুনের গোলার ধাক্কা ইতিমধ্যেই লেগেছে শুক্র গ্রহে। এমতাবস্থায়, বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন যে সূর্য থেকে ছিটকে আসা সৌরকণা ও সৌরবায়ু এবার পৃথিবীর দিকেও প্রবল বেগে ধেয়ে আসতে পারে।

এদিকে, শুক্র গ্রহের অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ। এক সপ্তাহে পরপর দু’বার সৌরঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে ওই গ্রহ। যার ফলে রীতিমতো ঝলসে গিয়েছে শুক্রের পৃষ্ঠদেশ। ইতিমধ্যেই নাসার (NASA) স্টিরিও স্পেসক্রাফ্ট, গত ৫ সেপ্টেম্বর সূর্যে ওঠা ভয়ঙ্কর ঝড়ের ছবি সামনে এনেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, একের পর এক বিস্ফোরণের ফলে ভয়াবহ আগুনের রশ্মি ছিটকে বেরিয়ে আসছে। আর এভাবেই সূর্য থেকে ছিটকে আসা আগুনের গোলার ধাক্কা লাগছে শুক্র গ্রহে। এই প্রসঙ্গে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, বিগত কয়েক দিনে সূর্যের মধ্যে বিভিন্ন গ্যাসের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। যার ফলস্বরূপ, ধারাবাহিকভাবে বিস্ফোরণ হয়ে চলেছে সেখানে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তরটি হল করোনা। বর্তমানে এই স্তরটিই রীতিমতো অশান্ত হয়ে উঠেছে। মূলত, করোনা স্তর থেকেই সৌরঝড়ের জন্ম হয়। সাধারণত, সৌরবায়ুর গতিবেগ হতে পারে সেকেন্ডে ৫০০ কিলোমিটার। সর্বোপরি, সৌরঝড় আমাদের সৌরমণ্ডলের একেবারে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমতাবস্থায়, নাসা জানাচ্ছে, সৌরঝড়ের প্রকোপে সৌরমণ্ডলের গ্রহগুলিও বিপদে পড়তে পারে।

এদিকে, প্রচণ্ড গতিতে সৌরকণাদের ছিটকে বাইরে বেরিয়ে আসার ঘটনাটিকে বলা হয়, “করোনাল মাস ইজেকশন”। এই ঘটনাটি হল অত্যন্ত শক্তিশালী। মূলত, ১০০ কোটি বা তারও বেশি পরমাণু বোমা এক সঙ্গে ফাটলে যে পরিমান শক্তির জন্ম হয়, এক্ষেত্রেও ঠিক ততটাই শক্তির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ইতিমধ্যেই নাসার সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরিতে ধরা পড়া ছবিতে দেখা গিয়েছে যে, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০ লক্ষ মাইল গতিতে এই সৌরকণাগুলি ছড়িয়ে পড়ছে মহাকাশে।

পৃথিবীর ওপর কি কি প্রভাব পড়বে: এই প্রসঙ্গে সৌরপদার্থ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত শক্তিশালী এই সৌরকণারা যদি পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি চলে আসে তাহলে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে তাদের প্রবল ধাক্কা শুরু হবে। সেক্ষেত্রে সৌরকণাদের সম্মিলিত শক্তি যদি বেশি হয়ে যায়, তার ফলে পৃথিবীর রেডিও বা টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা তছনছ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্ত হবে জিপিএস নেটওয়ার্ক।

সর্বোপরি, সৌরবায়ু, সৌরঝড় এবং সৌর বিকিরণের মত মহাজগতিক বিষয়গুলি বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্যও দায়ী। পাশাপাশি, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চাঁদও। চাঁদে যেহেতু চৌম্বকক্ষেত্রের বর্ম নেই সেক্ষেত্রে সরাসরি সৌরঝড় ধাক্কা দিতে পারে সেখানে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যদি পৃথিবীতে চৌম্বকক্ষেত্রের আস্তরণ না থাকত সেক্ষেত্রে এই শক্তিশালী সৌরঝড়ের প্রভাব হত আরও মারাত্মক। সমস্ত রেডিও ও টেলি যোগাযোগ সম্পর্ক বিছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি যোগাযোগ স্তব্ধ হয়ে যেত স্যাটেলাইটের সঙ্গে। এছাড়াও, বিমানের সেন্সর অকেজো হওয়ার পাশাপাশি বদলে যেত আবহাওয়ার প্রকৃতিও।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর

X