ভারতের প্রথম রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ছিল কলকাতার এই বাড়িতেই! এর ইতিহাস অবাক করবে সকলকে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: “মিউজিয়াম” (Museum) শব্দটা শুনলেই আমরা সাধারণত প্রাচীন কোনো বিষয় অথবা দুষ্প্রাপ্য সব জিনিসপত্রের কথা মনে করি। মূলত, মিউজিয়ামে এগুলিকে দেখার জন্যই ভিড় জমান সকলে। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের সামনে এমন একটি মিউজিয়ামের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যেখানে গেলেই প্রত্যক্ষ করা যাবে টাকার ভিড়কে। হ্যাঁ, প্রথমে শুনে একটু খটকা লাগলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। এমনকি, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এহেন বিষ্ময়কর মিউজিয়াম খোদ শহর কলকাতা (Kolkata)-তেই উপস্থিত রয়েছে।

মূলত, ওই মিউজিয়ামে গেলেই আপনি রীতিমতো পৌঁছে যাবেন এক অন্য জগতে। এমতাবস্থায়, প্রশ্ন উঠতেই পারে যে কলকাতা শহরের কোথায় রয়েছে এই যাদুঘর? ৮ নম্বর কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে অবস্থিত রয়েছে এই চমকপ্রদ মিউজিয়াম। যেটির নাম হল, “দি আরবিআই মিউজিয়াম।” এটি হল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রদর্শনশালা। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এই মিউজিয়ামটি সেন্ট জোন্স চার্চের উল্টোদিকে ৮ নম্বর কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটের যে বাড়িতে অবস্থিত রয়েছে সেখানেই ১৯৩৪ সালে সূচনা হয়েছিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের।

যদিও, কিছুদিনের মধ্যেই ওই ব্যাঙ্ক তৎকালীন বম্বে (বর্তমানে মুম্বাই) শহরে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। পাশাপাশি, মিউজিয়ামটি যে বাড়িটিতে রয়েছে সেটির স্থাপত্যও আকৃষ্ট করবে সবাইকেই। ওই বাড়িটির একতলায় এই মিউজিয়ামটি রয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো প্রবেশমূল্যের প্রয়োজন হয় না। মঙ্গলবার থেকে রবিবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে টাকার এই অনন্য যাদুঘরটি।

এই মিউজিয়ামে প্রবেশ করলেই আপনি দেখতে পাবেন টাকা ও মুদ্রা সম্পর্কিত কিছু দুষ্প্রাপ্য নমুনা এবং ছবি। এক টাকার কয়েনের গেট দিয়ে ঢুকেই দেখা যাবে বিরাট অভ্যর্থনা কক্ষটিকে। সেখানেই খোঁজ মিলবে আমাদের দেশ সহ আরও একাধিক দেশের দুষ্প্রাপ্য সব কারেন্সি নোটের ছবি এবং সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

currency1 (1)

শুধু তাই নয়, প্রাচীন কালে দীর্ঘসময়ে ধরে টাকার মান নির্ধারিত হত সোনার মূল্য দিয়ে। এমতাবস্থায়, সেই সমমূল্যের সোনা জমা রাখা হত ভল্টে। মডেলের মাধ্যমে এই পুরো বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। এছাড়াও, একটা সময়ে ভারত সরকার সিডিও প্রেস থেকে বন্ড ছাপাত। সেই মডেলটিকেও প্রত্যক্ষ করা যাবে ওই মিউজিয়ামে। পাশাপাশি, দেখা যাবে টাকা ছাপানোর মেশিনও। এছাড়াও, এমন কিছু নোট রয়েছে যেগুলি প্রথম প্রকাশের সময়ে কিছু ভুল ছিল। এমতাবস্থায়, সেগুলি-সহ পরবর্তী ক্ষেত্রে সংশোধনী নোটের প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। এর পাশাপাশি এক্কেবারে প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিনিময় প্রথার একাধিক বিবর্তনের মাধ্যমে কিভাবে নোটের উৎপত্তি হয়েছে তাও ছোট ছোট মডেলের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা হয়েছে ওই মিউজিয়ামে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর