বাংলা হান্ট ডেস্ক: নিজেদের পোষ্যের প্রতি প্রত্যেকেরই এক আলাদা দুর্বলতা থাকে। পাশাপাশি, তাদের মৃত্যুতেও নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। তবে, এবার পোষ্য মোরগের মৃত্যুর পর এক ব্যক্তির নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ সামনে আসতেই রীতিমতো স্তম্ভিত হয়েছেন সকলে। মূলত, কোনো ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর বিভিন্ন আচারের মধ্য দিয়ে তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এমতাবস্থায়, ওই মোরগের মৃত্যুর পরেও সমস্ত ক্রিয়া সম্পন্ন করলেন মোরগটির মালিক।
হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঠিক এইরকমই এক ঘটনা সামনে এসেছে উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় থেকে। সর্বোপরি, ওই মোরগটির পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য তার মালিক মাথাও কামিয়ে ফেলেন এবং ৫০০ জনের জন্য একটি ভোজের ব্যবস্থাও করেছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে প্রতাপগড় জেলার ফতানপুর থানা এলাকার বেহদৌল কালা গ্রামে। সেখানকার বাসিন্দা ডাঃ সালিক রাম সরোজের একটি পোষা মোরগ ছিল। যাকে তিনি খুব ভালোবাসতেন।
পাশাপাশি, সেটির নাম ছিল “লালি”। এমতাবস্থায়, গত ৮ জুলাই, সরোজ যথারীতি তাঁর ক্লিনিকে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময়েই বাড়িতে বাঁধা অবস্থায় থাকা একটি ছাগলের বাচ্চা বাইরের একটি কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়। এদিকে, ওই বাচ্চাটিকে বাঁচাতে কুকুরটির সাথে লালির লড়াই শুরু হয়ে যায়। প্রায় আধঘন্টা ধরে চলতে থাকা এই প্রচণ্ড লড়াইয়ের ফলে শেষ পর্যন্ত মারা যায় লালি।
যদিও, ওই কুকুরের হাত থেকে ছাগলের বাচ্চাটিকে বাঁচাতে সক্ষম হয় ওই মোরগটি। স্বাভাবিকভাবেই, এই ঘটনায় সরোজ গভীরভাবে শোকাহত হয়ে পড়েন। পাশাপাশি, মোরগটিকে বাড়ির পাশেই মাটিতে কবর দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। মাথা ন্যাড়া থেকে শুরু করে অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান নিয়ম মেনে সম্পন্ন করেন সরোজ। জানা গিয়েছে, গত বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মানুষ ভোজে অংশগ্রহণ করেন।
এই প্রসঙ্গে সরোজের মেয়ে অনুজা বলেন, “লালি আমার ভাইর মতো ছিল। তার মৃত্যুর পর ২ দিন বাড়িতে কেউ খাবার খায়নি। থমথমে পরিবেশ ছিল। আমরা লালিকে রাখিও পরাতাম।” এদিকে, স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।