বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: আশঙ্কা চলছিল গত কয়েকদিন ধরেই। নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিজেই অবহিত হয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে প্রিয়জনদের বিদায় ও জানিয়ে দিয়েছিলেন নিজে থেকেই। এবার সত্যি সত্যি ২০২২ শেষ হওয়ার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ৩ বারের বিশ্বকাপজয়ী, ব্রাজিল তথা গোটা বিশ্বে সমাদৃত সর্বকালের অন্যতম সেরা কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার অসুস্থ হয়েছেন কিংবদন্তি ফুটবলার। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার কোলনে একটি টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পর থেকে নিয়মিত চিকিৎসকদের নজরে ছিলেন। কিন্তু ২০২২ সালের শেষের দিকে তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু ক্রমেই যেন অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। পেলের কন্যা, কেলি ন্যাসিমেন্টো, বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার আগে অবধি নিজের বাবার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট দিয়েছিলেন। তিনিই জানিয়েছিলেন যে তার বাবা চূড়ান্ত সময়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন।
১৯৫৬ সালে ব্রাজিলের স্যান্টোস ক্লাবের হয়ে কেরিয়ার শুরু করা পেলে ১৯৫৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে গোটা দুনিয়ার নজরে আসেন। সেবার সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। ফাইনালে সুইডেনের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন পেলে। তারপর ১৯৬২ এবং ১৯৭০ সালেও দেশকে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছেন। ইউরোপের অনেক নামিদামি ক্লাবের অফার থাকলেও ব্রাজিল সরকার তাকে ন্যাশনাল ট্রেজার ঘোষণা করে এবং ১৮ বছর তিনি ব্রাজিলের ক্লাব স্যান্টোসেই খেলে তাদের দুটি কোপা লিবার্তেডোরেস জিতিয়েছেন। খেলোয়াড় জীবনের শেষ দুই বছর কাটিয়েছিলেন নিউইয়র্ক কসমস ক্লাবে যাদের হয়ে তিনি মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ভারতেও খেলে গিয়েছেন। ১৯৭৭ সালে ইডেন গার্ডেন্সে সবুজ মেরুণ শিবিরের বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিলেন ফুটবল সম্রাট। তার মৃত্যুতে এটিকে মোহনবাগানের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করেছে ইস্টবেঙ্গলও।
তার মৃত্যুর খবর পাওয়ামাত্র শোকপ্রকাশ করেছেন এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, “সমস্ত ব্রাজিলের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা, এবং বিশেষ করে জনাব এডসন আরন্তেস ডো ন্যাসিমেন্টোর পরিবারের প্রতি। চিরন্তন কিংবদন্তি পেলের এই বিদায়ে যে পুরো ফুটবল বিশ্বর কাছে কষ্টকর, তা সবাই জানেন। বহু মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা, আগামীর কাছে তিনি আজ, চিরতরে একজন উদাহরণ। তিনি সবসময় আমার জন্য যে স্নেহ দেখিয়েছিলেন তা দূর থেকেও আমি অনুভব করতাম। তিনি কখনই বিস্মৃত হবেন না এবং তার স্মৃতি চিরকাল বেঁচে থাকবে আমাদের প্রতিটি ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে। শান্তিতে থাকুন, কিং পেলে।” সদ্য বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি লিওনেল মেসিও তার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।