বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছরে একাধিকবার ভারতীয় মুদ্রায় পতন পরিলক্ষিত হয়েছে। এমনকি, এই পতন রীতিমতো সমস্ত রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে। এদিকে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) নিয়ন্ত্রণে চলতি বছরে একাধিক কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। এমতাবস্থায়, তাদের এই আগ্রাসী আর্থিক নীতির জেরে ক্রমশ শক্তিশালী হয়েছে ডলার।
অপরদিকে, ভারতীয় মুদ্রায় পতন ঘটেছে প্রায় ১১.৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এই প্রসঙ্গে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্যও সামনে এসেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে এশিয়ার সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করা মুদ্রাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ভারতীয় মুদ্রা। এদিকে, ২০১৩ সালের পর এহেন পতন প্রথমবার পরিলক্ষিত হয়েছে। যদিও, করোনার মত মারণ ভাইরাসের প্রকোপ থেকে প্রত্যাবর্তনের বছরে এহেন পরিসংখ্যান সবার কাছেই অপ্রত্যাশিত।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে বিশ্ববাজারে ক্রমশ অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে। এদিকে, বিশ্বের একাধিক উন্নত দেশগুলিও চরম মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে রয়েছে। এমতাবস্থায়, নিজের দেশে মন্দার অবস্থা দেখে আমাদের দেশ থেকে বিনিয়োগের টাকা তুলে নিয়েছে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে টাকার ওপরে। এদিকে, ২০২১ সালের শেষের দিকে মার্কিন ডলারের নিরিখে টাকার দর ছিল ৭৪.৩৩ টাকা। অথচ বর্তমানে সেটি ৮২.৭২ টাকায় এসে গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ICICI সিকিউরিটিজের ডেরিভেটিভ রিসার্চের প্রধান রাজ দীপক সিং জানিয়েছেন, “যদি উন্নত দেশগুলিতে মন্দার অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সেক্ষেত্রে ফেডের (মার্কিন) প্রত্যাশিত সময়ের চেয়েও বেশিদিন ধরে সুদের চড়া হার বজায় রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের রফতানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর এটিই রুপির কাছে প্রধান ঝুঁকি।”
শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এবং বিশ্লেষকরা অনুমান করছেন যে, এই আবহে নতুন বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতীয় মুদ্রা ডলারের নিরিখে ৮১.৫০-৮৩.৫০-র রেঞ্জের মধ্যে থাকতে পারে। তবে, এই অনুমানে আবার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ইক্যুইটি বিনিয়োগের প্রবণতার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করছে। এছাড়াও, নতুন বছরে কঠোর অর্থনৈতিক নীতি ছাড়াও একাধিক ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের আবহে ভারতীয় মুদ্রার অবস্থান নিয়ে এখনই সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।