বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ (Iran-Israel War) আরও গভীর হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ইরানের ৩ টি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এর পর, তেহরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলেও উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ভারতের মোট তেল আমদানির একটি বড় অংশ এই প্রণালী দিয়ে আসে। তবে, বিশ্লেষকরা বলেছেন যে রাশিয়া থেকে শুরু করে আমেরিকা এবং ব্রাজিল পর্যন্ত বিকল্প ক্ষেত্রগুলি যেকোনও ঘাটতি পূরণের জন্য সহজেই উপলব্ধ।
ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ (Iran-Israel War) আরও গভীর হচ্ছে:
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হরমুজ প্রণালী থেকে রাশিয়ার তেল আমদানি করা হয় না। সেটি সুয়েজ খাল, কেপ অফ গুড হোপ বা প্রশান্ত মহাসাগর হয়ে আসে। অন্যদিকে,আমেরিকা, পশ্চিম আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকা থেকেও তেল আমদানি করা যেতে পারে। যদিও এটি একটু বেশি ব্যয়বহুল হবে।
হরমুজ প্রণালীর ওপর ভারতের নির্ভরতা হ্রাস: জানিয়ে রাখি যে, কাতার ভারতের প্রধান সরবরাহকারী এবং ওই দেশ হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করে না। অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া এবং আমেরিকা থেকে আসা ভারতের LNG-র অন্যান্য উৎসগুলিও এর ফলে প্রভাবিত হবে না। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা অদূর ভবিষ্যতে অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং এর ফলে দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ মার্কিন ডলারে পৌঁছতে পারে।
আরও পড়ুন: ফের বন্যা ঘাটালে! মাস্টার প্ল্যান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেবের, জলমগ্ন এলাকায় পৌঁছলেন হিরণ
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারত তার অপরিশোধিত তেলের চাহিদার ৯০ শতাংশ পূরণের জন্য আমদানির ওপর নির্ভর করে এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার প্রায় অর্ধেক বিদেশ থেকে আসে। এমতাবস্থায়, আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (IIA) জানিয়েছে যে, ওই প্রণালীতে যেকোনও ব্যাঘাত বিশ্বব্যাপী তেল বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুন: আমেরিকার হামলার পর মোদীর সঙ্গে কথা ইরানের রাষ্ট্রপতির! কোন বিষয়ে হল আলোচনা?
রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বৃদ্ধি: এদিকে, ইরানের ওপর ইজরায়েলের আক্রমণের (Iran-Israel War) পর বাজারের অস্থিরতার আবহেই ভারত জুন মাসে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল ক্রয় বাড়িয়েছে। জুন মাসে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল ক্রয় পশ্চিম এশিয়ার সরবরাহকারী সৌদি আরব এবং ইরাক থেকে আমদানি করা পরিমাণকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য বিশ্লেষক সংস্থা কেপলারের প্রাথমিক তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে ভারতীয় শোধনাগারগুলি জুন মাসে রাশিয়া থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনছে। যা বিগত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ। শুধু তাই নয়, এটি ইরাক থেকে শুরু করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (UAE) এবং কুয়েত থেকে কেনা মোট তেলের পরিমাণের চেয়েও বেশি। গত মে মাসে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি ছিল প্রতিদিন ১৯.৬ লক্ষ ব্যারেল। জুন মাসে আমেরিকা থেকেও আমদানি বেড়ে ৪,৩৯,০০০ ব্যারেল হয়েছে। গত মাসে এই পরিমাণ ছিল ২,৮০,০০০ ব্যারেল দৈনিক। এদিকে, কেপলারের মতে, পশ্চিম এশিয়া থেকে সমগ্র মাসের আমদানির হিসেব প্রতিদিন প্রায় ২০ লক্ষ ব্যারেল। যা গত মাসের ক্রয়ের পরিমাণের চেয়ে কম।
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: