বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভাষার প্রতি ভালোবাসা, যে শুধুমাত্র ভাষার প্রতি ভালোবাসা নয় বরং সংস্কৃতির প্রতিও ভালোবাসা তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ একুশের ভাষা আন্দোলন। যখন ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন একের পর এক কিশোর। এবার এমনই এক উদাহরণ সামনে এল কাশী থেকে। সাধারণত আদালতে হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি ইত্যাদি ভাষা ব্যবহার হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ সংস্কৃতেও যে আইনি লড়াই লড়া যায় এ কথা হয়তো কেউ ভাবতেও পারবেন না। অনেকেই মনে করেন এই ভাষাটি কার্যত এখন মৃত।
কিন্তু কাশীতে এমন একজন উকিল রয়েছেন, যিনি দরখাস্ত থেকে শুরু করে আদালতের আইনি বাকবিতণ্ডা সমস্তটাই করেন সংস্কৃত ভাষায়। ৭৪ বছর বয়সী এই উকিলবাবুর নাম শ্যামজী উপাধ্যায়। গত ৪৩ বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন তিনি। তার কপালে কাশীর ধর্মীয় রীতি অনুযায়ীই থাকে বড় তিলক এবং ত্রিপুন্ড। সকালে শিবের পুজো না করে আদালতে রওনা হন না তিনি।
শ্যামজী জানিয়েছেন, তিনি যখন মির্জাপুরে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করতেন, একদিন তিনি দেখেন তার বাবা খুব বিমর্ষ হয়ে বসে রয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করলে তার বাবা জানান, তিনি আদালতে গিয়েছিলেন সেখানে তিনি দেখেন হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি ভাষার ব্যবহার। অথচ সংস্কৃতের ব্যবহার কোথাও নেই। শ্যামজী জানান সেদিন থেকেই তার ইচ্ছে ছিল সংস্কৃতে ওকালতি করার। তারপর সম্পূর্ণনন্দ সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আচার্য এবং হরিশচন্দ্র ডিগ্রী কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
সেই থেকেই বাবাকে দেওয়া কথা পালন করে আসছেন শ্যামজী। তাকে নিয়ে গর্ববোধ করেন তার অন্য সহকর্মীরাও। আইনজীবী কমলেশপতি ত্রিপাঠী জানান, তিনি যতদিন আদালতে আসছেন কোনদিন শ্যামজীকে সংস্কৃত ছাড়া অন্য কোন ভাষা ব্যবহার করতে দেখেননি। ভাষার প্রতি ভালোবাসাই যে ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা তার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ শ্যামজী উপাধ্যায়।