বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কথায় বলে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, যদি কেউ নিজের সমস্ত ইচ্ছা শক্তি দিয়ে বড় হওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে তিনি তাঁর পথে একদিন নিশ্চয়ই সফল হবেন, শুনতে নীতিকথা মনে হলেও আজ যে মানুষটির জীবন কাহিনী আমরা তুলে ধরতে চলেছি এক্ষেত্রে তিনি এক দৃষ্টান্ত। সর্বদা সত্যবাদিতা, পরিশ্রম এবং সুন্দর ব্যবহার বজায় রাখলে একজন কুলিও যে ২৫০০ কোটি টাকার ব্যবসায়ী হতে পারে নিজের জীবন দিয়ে তা দেখিয়ে দিয়েছেন এই মানুষটি। ব্যবসায়িক এমজি মুথুর (M. G. Muthu) নাম শোনেননি এমন মানুষ হয়তো কমই রয়েছেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না ঠিক কতটা দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন শুরু করেছিলেন তিনি।
এমজি মথুর (M. G. Muthu) বাবা কাজ করতেন তামিলনাড়ুর এক জমিদারের ক্ষেত খামারে। সরকারি স্কুলে মুথু ভর্তি হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু পেটে খিদে নিয়ে বেশিদিন পড়াশোনা চালানো সম্ভব হয়নি। সারাদিন কাজ করে শুকনো রুটি জোগাড় করাও বেশ কঠিন ছিল তার বাবার পক্ষে। যার জেরে ছোটবেলাতেই বাবার সাথে জমিদারের বাগানবাড়িতে কাজ শুরু করেন মুথু। কিন্তু সারাদিনে খাওয়া ছাড়া আর কিছুই জুটত না। মুথু বুঝতে পারেন এভাবে চালানো সম্ভব নয়।
১৯৫৭ সালে তিনি চলে আসেন মাদ্রাজ বন্দরে। কুলি হিসেবে মাল ওঠানো-নামানোর কাজ শুরু করেন। বহু বছর পরিশ্রমের পর অল্প অল্প করে বেশ কিছু টাকা জমিয়েছিলেন মুথু। তাই দিয়ে শুরু হয় তার নিজস্ব ব্যবসা। মুথুর সঙ্গে এলাকার ব্যবসায়ীদের যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক ছিল। সেই সুসম্পর্কের কারণে লোড এবং আনলোডের অনেক দায়িত্বই তাকে দিতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। একটা সময় যথেষ্ট নাম করে মুথুর লজিস্টিক কোম্পানি এমজিএম।
যদিও মুথুর মূলধন ছিল কম। একটু একটু করে সঞ্চয়ই ছিল তার ভরসা। কিন্তু সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং ভালো পরিষেবা দেওয়ার কারনে বেশকিছু ছোট ব্যবসায়ী আস্তে আস্তে ভরসা করতে শুরু করেন তার উপর। তার এই ভালো পরিষেবার কারণেই অবশেষে সেই ছোট্ট কোম্পানি থেকেই এমজিএম গ্রুপের মত বড় একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এমজিএম গ্রুপ আজ এমন একটি সংস্থা যখন খনিজ উত্তোলন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবারের ব্যবসায় রীতিমতো পরিচিত নাম আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও।
সম্প্রতি তামিলনাড়ুর কমল উইনারি নামে পানীয় সংস্থাকেও কিনে নিয়েছে এমজিএম। যা তামিলনাড়ুর একটি বিখ্যাত হুইস্কি ব্র্যান্ড। এছাড়া মালয়েশিয়াতেও মেরি ব্রাউন নামে একটি রেস্তোরাঁর মালিক এমজিএম গ্রুপ। মুথুর এই গল্প প্রমাণ করে যদি আপনার মধ্যে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস এবং ইচ্ছাশক্তি থাকে তাহলে সবকিছুই সম্ভব।