বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর অধ্যাবসায় থাকলে কোন বাধাই আসলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। চরম দারিদ্র্য সফলতার পথে কাঁটা বিছিয়ে দিতে পারে ঠিকই কিন্তু কখন অধ্যাবসায় আর জেদ থাকলে সেই কঠিন পথও পার করা যায়, সেটা আরও একবার প্রমাণ করলেন আইএএস শুভম গুপ্ত। মহারাষ্ট্র ক্যাডারের আইএএস অফিসার শুভম গুপ্ত নিজের ভাগ্য লিখেছেন নিজের হাতেই। একের পর এক অসফলতা আসলেও ভেঙে পড়েননি তিনি। আর তাই আজ দেশের অন্যতম কঠিন চাকরির পরীক্ষায় সফল হয়ে নিজের পরিবারকে গর্বিত করেছেন তিনি।
শুভম গুপ্ত মূলত রাজস্থানের বাসিন্দা। সিকার জেলার ভূদোলি গ্রামে বসবাসকারী একটি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা অনিল গুপ্ত করতেন ঠিকাদারের কাজ। আর তা থেকেই একটি ছোট্ট সংসার চলে যেত কোনরকমে। কিন্তু শুভম যখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তখন হঠাৎই বাবাকে চলে আসতে হয় রাজস্থান থেকে মহারাষ্ট্রে। ঠিকাদারির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় আর্থিক অভাবের মুখে পড়ে গোটা পরিবার। অবশেষে পালঘর জেলার দহানু রোডে একটি জুতোর দোকান খোলেন শুভমের বাবা।
পড়াশোনার সাথে সাথে বাবাকেও সাহায্য করতেন শুভম। স্কুল শেষে বিকেল চারটে থেকে নটা অবধি দোকান সম্মেলন হয়েছিল তার কাজ। কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও পড়াশোনা ছাড়েননি তিনি। অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী করে ২০১৫ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ পাস করেন শুভম এবং তারপর এম.এর পরীক্ষাতেও সফল ভাবে উত্তীর্ণ হন। সে সময় শুভমকে যারা দেখেছেন তারা হয়তো ভাবতেও পারেননি জুতা বিক্রি করায় ছেলেই একদিন দেশের অন্যতম কঠিন চাকরির পরীক্ষায় পাশ করবেন।
তবে দারিদ্র তার জেদকে টলাতে পারেনি। দোকান চালানোর পাশাপাশি তিনি চালিয়ে যান পড়াশোনাও। সিদ্ধান্ত নেন ইউপিএসসি পরীক্ষা দেবেন। যদিও তিন-তিনবার পরীক্ষা দিয়েও সফল হতে পারেননি তিনি। কিন্তু ফের চতুর্থবার নিজেকে প্রস্তুত করেন শুভম এবং চতুর্থবারের এই চেষ্টায় সফল হন তিনি। গোটা পরিবার আজ গর্বিত তার এই কৃতিত্বে। এখন মহারাষ্ট্র ক্যাডারের গুরুত্বপূর্ণ অফিসার শুভম গুপ্ত।