বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমন কিছু ঐতিহাসিক রহস্য মজুত রয়েছে যা সবাইকেই অবাক করে দেয়। পাশাপাশি, সেগুলি আকৃষ্ট করে পর্যটকদেরও। আর সেগুলির মধ্যে অন্যতম একটি আকর্ষণ হল মমি (Mummy)। মূলত, মিশরে মমির ধারণা বহুকাল ধরেই ছিল। যেখানে মৃত্যুর পর মৃতদেহে বিশেষ ধরণের প্রলেপ দেওয়া হতো। আর ওই প্রলেপের জন্যই মৃতের শরীরে ধরত না কোনো পচন। পাশাপাশি, তখন বিশ্বাস করা হত যে, মৃত্যুর পরে মৃত ব্যক্তি আবারও জীবিত হয়ে উঠতে পারেন। সেই কারণে দেহটির সংরক্ষণ করা হত।
এমতাবস্থায়, বর্তমান সময়ে খননকালে প্রায় আট হাজার মমি পাওয়া গেছে। আর সেগুলির মধ্যেই রয়েছে দুই বছরের শিশু কন্যা রোজালিয়া লোম্বারডো (Rosalia Lombardo)-র মৃতদেহ। জানা গিয়েছে, এই মমিগুলি ইতালির উত্তর সিসিলিতে Capuchin Catacombs of Palermo-তে সংরক্ষিত রয়েছে।
সেখানেই রোজালিয়ার মমিটিও পর্যটকদের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে। কথিত আছে যে, এই মমিটির দিকে যাঁরা তাকান তাঁদের দিকে তাকিয়ে মমিটি চোখের পলক ফেলে। এমতাবস্থায়, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন রোজালিয়ার মমিটিকে দেখতে। মূলত, ওই বাচ্চা মেয়েটির মমিটির দিকে তাকালে মনে হয়ে সে যেন ঘুমিয়ে রয়েছে। পাশাপাশি, মমিটির সৌন্দর্যও অবাক করে সবাইকে।
অসুখে হয় মৃত্যু: জানা গিয়েছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জন্মদিনের ঠিক এক সপ্তাহ আগেই মারা যায় রোজালিয়া। এমতাবস্থায়, তার পরিবারের সদস্যরা মমিটিকে সংরক্ষিত করেছিলেন। এখন এটি ইতালিতে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, একশ বছর পরেও এই মমিটি বাকরুদ্ধ করে দেয় পর্যটকদের। তার মরদেহটি রাখা রয়েছে কাঁচের কফিনে। প্রতি বছর শুধুমাত্র রোজালিয়ার এই মমিটিকে দেখতেই হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন।
চোখের পলক পড়ে: রোজালিয়ার মমি সম্পর্কে বলা হয় যে, সে পর্যটকদের দিকে তাকিয়ে চোখের পলক ফেলতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এসবই হল আলোর খেলা। মূলত, ওই মমির উপরে আলো এমনভাবে রাখা হয়েছে যেখানে একটি কোণ থেকে মমিটির চোখ খোলা অবস্থায় দেখা যায়। জানিয়ে রাখি, রোজালিয়ার মৃতদেহ যে জায়গায় রাখা হয়েছে, সেখানে আরও প্রায় আট হাজার মমি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৬৩ টি শিশুর মমি। সেগুলির মধ্যে কিছু কিছুর ক্ষেত্রে শুধু হাড়ের কাঠামো রয়েছে। কিন্তু রোজালিয়ার মমি এখনও সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে।