বিদ্যার দেবী সরস্বতী , আর এই দিন টার জন্য বছর ধরে অপেক্ষা করে প্রত্যেকটা বাঙ্গালী । বিসশে করে ছাত্র ছাত্রিরা । তারা এই একটা দিন নিজের মতন করে আনন্দ করে থাকে । আর সরস্বতী পুঁজোর দিন কুল খাবেনা এমন কাউকে খুজে পাওয়া মুশ্কিল। কিন্তু তার থেকেও গম্ভির বিষয় হল সরস্বতী পুঁজোর আগে কেউ কুল খেতে চায়না। কারন আমদের মধ্যে কিছু বিশেষ সংস্কার প্রচলিত আছে।
যদি কেউ সরস্বতী পুঁজোর আগে কুল খায় তবে বিদ্যার দেবী তার উপর অসুন্তুস্ট হবেন। তার পড়াশোনা খারাপ হয়ে যাবে । পরিক্ষার ফল খারাপ হবে। এবং এরকম আরও কত কি। তবে এর পেছনে একটা লম্বা ইতিহাস আছে, কেন সরস্বতী পুঁজোর আগে কুল খেতে নেই। সরস্বতী দেবীকে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব বদরিকাশ্রমে তপস্যা করছিলেন। তপস্যা শুরুর পূর্বে তার তপস্যা স্থলের কাছে একটি কুল বীজ রেখে শর্ত দেওয়া হলো যে যখন এই কুলবীজ অংকুরিত হয়ে চারা,চারা থেকে গাছ,গাছের ফুল হতে নতুন কুল হবে এবং সেই কুল পেঁকে ব্যাসদেবের মাথায় পতিত হবে।
সেইদিন তার তপস্যা পূর্ণ হবে বা সরস্বতী দেবী তুষ্ট হবেন।ব্যাসদেব ও সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করলেন।বেশ কয়েক বছরে এই কুলবীজ অংকুরিত হয়ে চারা,চারা থেকে বড় গাছ,বড় গাছের ফুল থেকে নতুন কুল হয় এবং একদিন তা পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পতিত হয়। তখন উনি বুঝতে পেরেছেন তার তপস্যা পূর্ণ হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, মাহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে সরস্বতীর পাশাপাশি শিব ও পার্বতীরও পুজো করা হয়।
কুল এর আরেক নাম বদ্রী,তপস্যার সাথে বদ্রী এর সম্পর্ক থাকায় ঐ জায়গার নাম বদরিকাশ্রম নামে প্রচার হয়ে যায়।শ্রীপঞ্চমীর দিন, বেদমাতা সরস্বতীকে বদ্রী বা কুল ফল নিবেদন করে অর্চনা করে তিনি ব্রহ্মসূত্র রচনা আরম্ভ করেন ও সরস্বতী দেবী তুষ্ট হয়েছিলেন। আর তাই আমরা ওই দিন দেবী কে কুল নিবেদন করে তারপর নিজেরা প্রসাদ হিসেবে কুল খাই। তবে এছাড়াও অন্য একটা বিষয় আছে সেটা হল কুল শীত কালের ফল কিন্তু আগে তা পাকে না । আর কুল পাকার আগে খেলে পরে পেটে মারাত্মক ব্যাথা হতে পারে। তাই এই ব্যাপারে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাবা মায়েরা এই গল্প দিয়ে তাদের কুল খাওয়ার থেকে আটকাতে পারেন।