এক জেলাতেই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি! প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষাতে আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাদ ৪০ হাজার নাম

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুদিন ধরেই বারংবার আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) তালিকায় উঠে আসছে একের পর এক দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ। পেল্লায় পেল্লায় পাকা বাড়ি, তবুও যোজনার তালিকায় নাম নথিভুক্ত রয়েছে স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পরে গেছে গোটা রাজ্যে। গরিবদের ন্যায্য পাওনা শুষে নিয়ে আরও ধনী হয়ে উঠছে বিত্তবানরা, ঠিক এমনই অভিযোগ উঠে এসেছে বাংলার বহু প্রান্ত থেকে। আর এবার প্রকাশ্যে এলো আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আবাস যোজনার তালিকা যাচাইয়ের প্রথম পর্যায়েই বাদ পড়ল ৪০ হাজার উপভোক্তার নাম! তবে এটা শুধু মালদা (Malda) জেলার পরিসংখ্যান।

৪০ হাজার! পরিসংখ্যান শুনেই রীতিমতো চোখ কপালে সাধারণ মানুষের। শুধুই কী আম জনতা? পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির এই বহর শুনে হতবাক জেলার শীর্ষস্তরের আধিকারিকরাও। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জেলার মোট তালিকাভুক্তদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের ‘আবাস প্লাস’ সমীক্ষায় বাদ পড়ার পরিসংখ্যানটা প্রায় ৪০ হাজার। বাদ পড়েছে মোট শতাংশের ২৫ শতাংশ নামই। জানা গিয়েছে মালদার ১৫টি ব্লকে মোট ১ লক্ষ ৬৭ হাজার উপভোক্তার নাম ছিল। প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষা শেষে প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ নাম আপাতত তালিকায় রয়েছে।

তবে কাদের নাম দিয়ে দিয়ে পরিপূর্ণ ছিল দুর্নীতির এই তালিকা? জানা গিয়েছে, পাকা বাড়ি তো দূর, আবাসের সেই তালিকায় নাম রয়েছে দোতলা-তিনতলা পেল্লায় বাড়ির মালিক থেকে শুরু করে, কোটিপতি ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যদের নাম। পাশাপাশি শিক্ষক থেকে সরকারি চাকুরীজীবীদের নামও রয়েছে সেই তালিকায়। শুধু তাই নয় কোথাও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির একাধিক সদস্য, কোথাও সমিতি বা পঞ্চায়েত সদস্য নিজেই ছিল উপভোক্তা। সূত্র মারফত খবর, মালদার ইংরেজবাজারে উপভোক্তা তালিকায় রয়েছে ৫৩ জন পঞ্চায়েত সদস্যের নাম। বৈষ্ণবনগরে ৩৮ জন জনপ্রতিনিধির নাম উপভোক্তা তালিকায়। সেই সঙ্গে মানিকচক, মোথাবাড়ি, গাজোল, রতুয়া, চাঁচোল, হরিশচন্দ্রপুর-সহ মালদা জেলার ১৫টি ব্লকে অন্তত ৮০০ জন জনপ্রতিনিধির নাম ছিল এই তালিকায়। প্রশাসন সূত্রে যা মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

pmay

পাশাপাশি, মালদা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে ,চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচাই করার পরই উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হবে। সেই জন্য প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সকল সংসদে প্রকাশ্য গ্রামসভা বসবে। সেই গ্রামসভায় সংসদের কারও নামে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে গ্রামবাসীরা তা তুলে ধরবেন। এভাবেই তালিকায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে। অন্যদিকে, আশাকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের সঙ্গে গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষার কাজে নেমেছেন মালদা জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া-সহ জেলার পদস্থ আধিকারিকরা, থাকছে বিডিও এবং ব্লক প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরাও।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর