বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছোটবেলা থেকেই আমরা জেনে এসেছি যে, ভারত (India) একটা সময়ে অত্যন্ত ধনশালী দেশ ছিল। পাশাপাশি, ভারতে স্থিত প্রাচীন মন্দিরগুলিতে থাকা মোট সম্পদের পরিমানও প্রমাণ করে দেয় যে, ভারতে সোনা-রূপোর প্রাচুর্য প্রাচীনকালে ঠিক কতটা ছিল! এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) তিরুপতি বালাজি মন্দিরের (Tirupati Balaji Temple) প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত করব। যেটি দেশের দ্বিতীয় ধনী মন্দির হিসেবে বিবেচিত হয়। এদিকে, এই তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ত্রিবান্দ্রমের পদ্মনাভ স্বামী মন্দির। মূলত, তিরুপতি বালাজি হল বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের একটি মন্দির। এই মন্দিরের নির্মাণশৈলী সবাইকে অবাক করে দেয়। এমনকি, প্রতি বছর তিরুপতি বালাজি মন্দিরে বিপুল পরিমান অর্থ ও সম্পদ দান করেন ভক্তরা।
রয়েছে ২.২৬ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ: এই মন্দিরটি পরিচালনা করে তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানাম (TTD)। কয়েক মাস আগেই, TTD প্রথমবারের মতো এই মন্দিরের মোট সম্পদের প্রসঙ্গ সামনে এনেছিল। যেখানে জানানো হয়, তিরুপতি বালাজি মন্দিরে প্রায় ৫,৩০০ কোটি টাকার ১০.৩ টন সোনা ব্যাঙ্কে জমা রয়েছে। এছাড়াও মন্দিরের ১৫,৯৩৮ কোটি টাকাও ব্যাঙ্কে জমা আছে। সবকিছু মিলিয়ে ওই মন্দিরের মোট সম্পদের পরিমান পৌঁছে গিয়েছে ২.২৬ লক্ষ কোটি টাকায়।
মন্দিরে ১০.৩ টন সোনা রয়েছে: পাশাপাশি, তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম জানায় যে, ২০১৯ সাল থেকে সোনা এবং নগদের পরিমান বেড়েছে। ২০১৯ সালে, ব্যাঙ্কগুলিতে ১৩,০২৫ কোটি টাকা নগদ ছিল। যা বর্তমানে বেড়ে ১৫,৯৩৮ কোটি টাকা হয়েছে। এভাবে গত তিন বছরে প্রায় ২,৯০০ কোটি টাকা বেড়েছে। এছাড়া সোনার পরিমানও বেড়েছে। ২০১৯ সালে মন্দিরের ৭.৪ টন সোনা ছিল। গত তিন বছরে এটি ২.৯ টন বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক বছরে ১,২০০ কোটি টাকা দান: তিরুপতি বালাজি মন্দিরে ভক্তরা প্রচুর দান করেন। দান গ্রহণের দিক থেকে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মন্দির। ২০১৮-১৯ সালে এই মন্দিরে মোট দান এসেছে ১,২১৪ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে, মোট ১,২৮১ কোটি টাকার দান আসে। এছাড়াও, ২০২০-২১ সালে ৭৩১ কোটি টাকার দান আসে এই মন্দিরে। মূলত, এই মন্দিরে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা দান করেন ভক্তরা।
চুল দান করেন ভক্তরা: তিরুপতি বালাজি মন্দিরে ভক্তরা চুল দানও করেন। এই মন্দির সম্পর্কে একটি বিশ্বাস আছে যে, এখানে যে ব্যক্তি তাঁর সমস্ত পাপ এবং অশুভ কিছু ত্যাগ করেন, তাঁর সমস্ত দুঃখ দূর হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, ভক্তরা এখানে তাঁদের পাপের চিহ্ন হিসাবে চুল রেখে যায়।
শুক্রবার সমগ্র মূর্তির দর্শন মেলে: তিরুপতি বালাজি মন্দিরে বালাজির সম্পূর্ণ মূর্তি শুধুমাত্র শুক্রবারে দেখা যায়। শুক্রবার সকালে অভিষেকের সময় এই দর্শন করতে পারেন ভক্তরা। যদিও, প্ৰতিদিন তিনবার বালাজির দর্শন করা যায়। প্রথমটি হয় সকালে। যাকে বিশ্বরূপ দর্শন বলে। দ্বিতীয় দর্শনটি হয় বিকেলে এবং তৃতীয় দর্শনটি রাতে হয়।
শ্রী রামানুজাচার্যকে দেখা দেন ভগবান: মনে করা হয় যে: শ্রী রামানুজাচার্যের কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান। পাশাপাশি, শ্রী রামানুজাচার্য ১৫০ বছর বেঁচে ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি সারা জীবন ভগবান বিষ্ণুর সেবা করেন।