বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ সরস্বতী পুজো (Sarawasti Pujo)। বাগদেবীর আরাধনায় মেতে উঠেছে গোটা বাংলা। বিদ্যার দেবীর প্রার্থনায় আজ মত্ত সকল পড়ুয়া। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) তমলুকের (Tamluk) আলুয়াচক জুনিয়ার হাইস্কুলের চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে পঠনপাঠন। তবে শুনলে অবাক হবেন ৩ শ্রেণীর পড়ুয়ার সবটা মিলিয়ে রয়েছে মাত্র ১ জন ছাত্র। হ্যা, শুনতে একেবারেই অদ্ভুত মনে হলেও এটাই সত্যি। তবে তাতেও বন্ধ হয়নি পঠনপাঠন। তবে শর্তসাপেক্ষভাবে পড়তে আসে ওই পড়ুয়া। পড়াশোনা বেশি জবরদস্তি বা জোর দেওয়া যাবে না, ঠিক এই শর্তেই আসে ওই ছাত্র।
ছাত্র সংখ্যা ১, আর সেও স্কুলে আসে সপ্তাহে দু তিন দিন। তবে দুপুর ১২ টার ঘরে ঘড়ির কাঁটা পৌঁছালেই ছাড়তে হবে তাঁকে। অন্যদিকে, স্কুলে রয়েছেন ৩ জন শিক্ষক। তারাও রোজ হাজিরা দিতে উপস্থিত হন। শিক্ষকদের অভিযোগ, গ্রামবাসীদের বাড়িতে গিয়ে গিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করার জন্য অনুরোধ জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। অন্যদিকে অন্যান্য স্কুলের মতই এই স্কুলেও রয়েছে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা। তবে যেদিন যেদিন ওই ছাত্র আসে, শুধুমাত্র সেদিনই হয় রান্না।
শিক্ষকদের অভিযোগ, এলাকা থেকে কিছুটা দূরের এক স্কুলে অন্যান্য পড়ুয়ারা ভর্তি হচ্ছে। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন স্কুলে এসে শুধুমাত্র বসে থাকাও তাঁদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছেনা বলেই জানান শিক্ষকরা। দাবি, অন্যত্র কোথাও তাঁদের স্থানান্তরিত করা হোক। পাশাপাশি সন্ধ্যা নামলেই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে পরই মদ ও গাঁজার আসরও বসে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
অন্যদিকে যেই এক ছাত্রটি স্কুলে পড়তে আসে সে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ায় বন্ধ সরস্বতী পুজোও। শিক্ষকদের বক্তব্য পড়ুয়া না থাকলে, পুজো হবেই কার জন্য। স্কুলের এই দুর্দশার প্রসঙ্গে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেশ হাজরা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের এই অবস্থা, আমরা জানি। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমরা আবেদন করেছি, ওই ছাত্রকে যাতে অন্য কোনও স্কুলে ভর্তি করানো হয়, শিক্ষকদেরও অন্য স্কুলে বদলি করানো হয়।”