বাংলাহান্ট ডেস্কঃ খাবারকে বিষক্রিয়া থেকে মুক্ত রাখার জন্য সিকিমে (Sikim) জৈব চাষের (organic farming) পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়। এই পদ্ধতির প্রয়োগের জন্য জৈব কৃষি নির্ভর রাজ্যের তকমাও পেয়েছে সিকিম। পাহাড় ঘেরা এই রাজ্যে ভ্রমণের উদেশ্যে পাড়ি দেন বহু পর্যটক। তবে সিকিম সরকারের তরফ থেকে কীটনাশক (Pesticides) ব্যহবারের উপর কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।
অনেকই হয়তো এই বিষয়টি সম্বন্ধে জানেন না যে, ২০১৬ সালে সিকিমকে প্রথম জৈব রাজ্য ( Organic states) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। চাষের জমিতে রাসায়নিক বা কীটনাশক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ফসল ফলানোর ধরণকে বলা হয় অর্গানিক চাষ (Organic farming) বলা হয়। সিকিম এই পদ্ধতির প্রয়োগ আরম্ভ করে বিষমুক্ত ফলন শুরু করে। ২০০৩-এ সিকিমের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং (Pawan Kumar Chamling ) প্রথম যখন কীটনাশক এবং রাসায়নিক সার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁর এই চিন্তা-ভাবনা তখন সারা রাজ্যে এক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাঁর এই সিদ্ধান্তে কৃষকেরাও একমত ছিলেন না।
এরপর সমস্ত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ২০০৪ সালে আইন করে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় সিকিম সরকার। এই আইন চালু হওয়ায় প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা দেখা দেয়। প্রথমে প্রায় দুই-তিন বছর ফলন কিছুটা কম হয়। কিন্তু তাতেও পিছুপা হননি সিকিম মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। এরপরই তিনি সিকিম জুড়ে শুরু করেন জৈব চাষের ব্যবস্থা। যার ফলে ধীরে ধীরে খারাপ অবস্থা থেকে ভালের মুখ দেখতে পায় কৃষকরা। খুব অল্পদিনের মধ্যেই এই জৈব চাষ খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করে নেয়। যার ফলে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে ২০১৪ থেকে কীটনাশকের ব্যবহার সিকিমে ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিকিম সফরে গিয়ে রাজ্যের অরগ্যানিক মডেলের ভূয়সী প্রশংসাও করেছিলেন। কীটনাশক ব্যবহারে অনেকরকম রোগ ছড়িয়ে পড়ত মানুষের শরীরে। কিন্তু এই জৈব চাষের ফলে নানাবিধ রোগ প্রতিরোধ করাও সম্ভব হয়েছে।