ভারতের একমাত্র স্টেশন, যেটিকে চাঁদা দিয়ে চালায় গ্রামবাসীরা! আজব শর্ত দিয়েছিল রেল

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: রাজস্থানে রয়েছে এক আজব স্টেশন। আপনি শুনলে আশ্চর্য হবেন যে ওখানকার নাগৌর জেলার “জলসু নানক হল্ট” রেলওয়ে স্টেশনটি সেখানকার গ্রামের লোকেদের অনুদানের ওপর চলতো। সম্ভবত দেশের একমাত্র স্টেশন যেখানে এমন ব্যাপার দেখা যায়। আর শুধু অনুদান দিয়ে চালানোই নয়, গ্রামবাসীরা সেই স্টেশন থেকে রেলকে ভালো অঙ্কের লাভও তুলে দিয়েছিল। জলসু নানক হল্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতীয় রেল প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করছে।

একসময় রেলওয়ে বিভাগে কম রাজস্ব দিয়ে স্টেশনটি বন্ধ করতে হয়েছিল। ২০০৫ সালে স্টেশনটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের পর গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাতে আরম্ভ করে। রেলের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে টানা ১১ দিনের জন্য প্রতিবাদে বসে গ্রামের মানুষ। তাদের জেদের কাছে হার মেনে রেল এই স্টেশনটি পুনরায় চালু করে, কিন্তু একটি শর্তের বিনিময়ে। সেই শর্তটি হল যে গ্রামবাসীদেরই এই রেলস্টেশনটি চালাতে হবে।

নিজেদের দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি এর পাশাপাশি মাসিক ১৫০০ দিনপ্রতি ৫০ টি টিকিট বিক্রিও বাধ্যতামূলক বলে জানায় রেল। গ্রামবাসীরা এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। তবে প্রাথমিক ভাবে আয় কম হলেও গ্রামের মানুষ হাল ছেড়ে পিছিয়ে আসেনা। বর্তমানে ভারতীয় রেলের এই স্টেশন থেকে আয়ের পরিমাণ ৩০,০০০ টাকার থেকেও বেশি। প্রত্যহ স্টেশনে ১০টির বেশি ট্রেন থামে।

গ্রামবাসীদের বয়ান অনুযায়ী তারা সাহস দেখিয়ে প্রতিটি বাড়ি থেকে সামান্য কিছু অনুদান জোগাড় করে স্টেশন চালু রাখে। সমস্ত অনুদান মিলিয়ে ১.৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ১৫০০ টি টিকিটও কেনা হচ্ছিল এবং বাকি টাকা গ্রামবাসীরা সুদ হিসাবে বিনিয়োগ করেছিল। এর পরে ৫০০০ টাকা বেতনের বিনিময়ে গ্রামবাসীদেরই একজন টিকিট বিক্রির জন্য স্টেশনে দায়িত্ব নেয়। সেই প্রাপ্ত সুদ থেকে তার মাইনে হতো।

nagaur jalsu nanak halt railway station rajasthan 3 1024x683 1

এই গ্রামটি মূলত সৈনিকদের। বর্তমানে ২০০-রও বেশি ছেলে সেনা, বিএসএফ, নৌ-বাহিনী, বিমানবাহিনী এবং সিআরপিএফ-এ রয়েছে। যেখানে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকের সংখ্যা আরও বেশি। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে ১৯৭৬ সালে এই সৈন্য এবং তাদের পরিবারের মানুষদের চলাচলের জন্য রেলওয়ে দ্বারা এখানে হল্ট স্টেশন চালু করা হয়েছিল।

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর