বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ইতিমধ্যেই দল ঘোষণা করেছে ভারত। তবে দল ঘোষণার থেকেও কার্যত বড় খবর হয়ে দাঁড়িয়েছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কাম ব্যাক। ভারতের অন্যতম সফল ক্যাপ্টেন এবার কার্যত ফের একবার ভারতীয় দলে কামব্যাক করছেন মেন্টর হিসেবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় দলে একজন এমন মানুষের দরকার ছিল যিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে নিজের তালুর মতো চেনেন। তাই বিসিসিআইয়ের এই সিদ্ধান্ত যে আগামী দিনে বড় প্রভাব ফেলবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এই পুরো পরিকল্পনাই আসলে বিসিসিআই সচিবের মস্তিষ্কপ্রসূত। গতকাল প্রেস কনফারেন্সেই বিসিসিআই সচিব জয় শাহ নিজেই জানিয়েছিলেন, “যতদূর ধোনির সাথে কথা বলার বিষয়, আমি দুবাইয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি শুধুমাত্র টি -টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য পরামর্শদাতা হতে রাজি হয়েছেন এবং আমি আমার সমস্ত সতীর্থদের সাথে এটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সবাই এ ব্যাপারে একমত।” কার্যত এটি যে একটি মাস্টার স্ট্রোক এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ বিসিসিআই সেক্রেটারি পদে আসার সময় যথেষ্ট সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে। তিনি ক্রিকেট বোঝেন না এমন প্রশ্নও উঠেছিল বারবার। তবে এই সিদ্ধান্তই বুঝিয়ে দিল ক্রিকেট বিষয়টি যথেষ্ট ভাল বোঝেন তিনি।
রবি শাস্ত্রী এবং বিরাট কোহলি জুটি থাকাকালীন অন্য কারও কথা দিয়ে চলে না, এর দৃষ্টান্ত আগেও সামনে এসেছে বারবার। এমনকি রাহুল দ্রাবিড় এবং জাহির খানকে ব্যাটিং এবং বোলিং পরামর্শদাতা করে পাঠানোর পরেও তাদেরকে কার্যত সাইডলাইন করে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড সফর থেকেও সরে গিয়েছিলেন তারা। এমতাবস্থায় বুঝে নিতে কোনো অসুবিধা হয় না যে একমাত্র ধোনিই এমন এক ব্যক্তি, যিনি পারবেন কোহলিকে ঠান্ডা রাখতে আবার শাস্ত্রীকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দিতে।
নামে মেন্টার হলেও আসলে যে ধোনি হতে চলেছেন টিমের বড় দাদা এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক সময়ই এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যা দেখে মনে হয়েছে টু ম্যান আর্মির প্রাধান্য চলছে গোটা দলে, এমনকি অনিল কুম্বলের সঙ্গে কি হয়েছিল তাও কারও অজানা নয়। এবার কার্যত সেই রীতিতেই কিছুটা আঘাত হানলেন জয় শাহ। কারণ মাহি এমন একজন মানুষ, যিনি পিছনের বেঞ্চে বসে থাকার লোক নন। আর তাই দলে যে তার প্রাধান্য থাকবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই, কারণ বিরাটও তাকে গুরু হিসেবে মানেন। মাহি ভাইকে মেনে চলেন অন্যরাও, আর তাই দলে শুধু দু’জনের কথা এবার চলবে না, অন্তত এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ধোনির দলে আসায় খুশি হয়েছেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলীও। আর তাই সরাসরি তিনি জানিয়েছেন, “দলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির যোগদান করায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করার একটা পথ তৈরি হল। বিসিসিআইয়ের এই অফার গ্রহণ করার জন্য এবং দলকে সাহায্য করার জন্য আমি ধোনিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।” ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করছেন শুধু ধোনিকে মেন্টর বানানোই প্ল্যান নয় জয়-সৌরভ জুটির। আগামী দিনে কোচ হিসেবেও বিসিসিআইয়ের ভাবনায় রয়েছেন তিনি। কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরেই শেষ হচ্ছে রবি শাস্ত্রীর মেয়াদ।