বাংলা হান্ট ডেস্ক: স্বাধীনতা দিবস (Independence Day) উদযাপনের পর দেশবাসীকে পেট্রোল-ডিজেলের দাম (Petrol-Diesel Price) বৃদ্ধির উপহার দিল সরকার। তবে, এহেন ঘটনা ঘটেছে আমাদের পড়শি দেশ পাকিস্তানে (Pakistan)। মূলত, সেখানকার সরকারের একটি সিদ্ধান্ত দেশের জনগণের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বৃদ্ধির আবহেই আগামী ১৫ দিনের জন্য পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম লিটার প্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সেদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যা পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই গত মঙ্গলবার অর্থ বিভাগ একটি বিবৃতি জারি করে এই দাম বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে এনেছে। উল্লেখ্য যে, এই দাম বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ হল পাকিস্তান রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
দাম ১৬ অগাস্ট থেকে প্রযোজ্য: এদিকে, এই ঘোষণার পর পাকিস্তানে পেট্রোল প্রতি লিটারে ১৭.৫০ টাকা এবং হাই স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) প্রতি লিটারে ২০ টাকা বেড়েছে। এদিকে, এই নতুন দাম ১৬ অগাস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, দাম বৃদ্ধির ফলে পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে ২৯০.৪৫ টাকা এবং ডিজেল প্রতি লিটারে ২৯৩ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা, সম্পত্তিতে আদানি-অম্বানিকেও টেক্কা দেবেন এই পাকিস্তানি মহিলা
এর আগে গত ১ অগাস্ট, পূর্ববর্তী পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)-এর নেতৃত্বাধীন সরকার পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ১৯ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা করেছিল। উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বৃদ্ধির আবহেই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে, জ্বালানির এই নতুন দামের জেরে পাকিস্তানে আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা রয়েছে। এমনিতেই গত মে মাসে, পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার রেকর্ড তৈরি করে ৩৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: আর নেই উপায়! এবার এই কারণে ৭৬ বছর পরে ভারত নীতি বদলাতে চলেছে পাকিস্তান! সামনে এল বড় তথ্য
কেন বৃদ্ধি পেয়েছে দাম: মূলত, গত ৩১ জুলাই এই ঘোষণা করার কথা থাকলেও সেইসময় সরকার তা করেনি। আধিকারিকরা তখন জানিয়েছিলেন যে, মুদ্রাস্ফীতির ভারে জর্জরিত সাধারণ মানুষের উপর পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি থেকে কিছুটা রেহাই দিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। গত ১২ অগাস্ট সরকার ভেঙে যাওয়ার পরে অর্থমন্ত্রী হিসেবে শেষবারের মতো প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ইশাক দার এটি ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেন, IMF পাকিস্তানের হারে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট লেভি (পিডিএল) আরোপের অনুমোদন দিয়েছে বলে দাম বৃদ্ধি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
টালমাটাল অর্থনীতি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে। অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু বছরের খারাপ ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্টের কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি এই অবস্থায় পৌঁছেছে। এছাড়াও, করোনার মতো ভয়াবহ মহামারী, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির সঙ্কট এবং গত বছরের বন্যার কারণে সামগ্রিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। এদিকে, গত মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে অতিরিক্ত তিন বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে পাকিস্তান। যার ফলে ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক ঋণ থেকে দেশটি সাময়িক রেহাই পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।