বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিশুশ্রম রুখতে কত চেষ্টা চলেছে সরকারি সংস্থা এবং বেসরকারি এনজিও তরফে। এ ধরনের সংগঠনের দৌলতে অনেক ছোট ছোট শিশুই হয়তো নতুন জীবন পেয়েছে। শিশুদের স্কুলে নিয়ে যাবার জন্য রয়েছে সরকারের কত কত প্রকল্প। কিন্তু এখনও চূড়ান্ত অন্ধকারেই রয়ে গেছে অগুনতি ছোট ছোট শিশুর ভবিষ্যৎ। এবার সামনে এলো এমনই এক ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্বস্থলীর শাহজাদপুর এলাকায়।
এই এলাকার বাসিন্দা বারো তেরো বছরের আলিফ খাঁর ঘটনা রীতিমতো চোখে জল এনে দেবে অনেকেরই। চার পাঁচ বছর আগে মা মনোয়ারা বিবি তাকে ছেড়ে চলে যায়। ভরসা ছিল বাবা, কিন্তু সেই বাবাও চলে গিয়েছে কেরালায় কাজের সন্ধানে। দুজনকে হারিয়ে কার্যত অথৈ জলে পড়েছে আলিফ। দাদু ঠাকুমা আছে বটে, তবে দাদু না থাকলে ঠাকুমা দেখেনা।
এলাকারই পাড়ার মোড়ে বাবার একটি চায়ের দোকান কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছিল। প্রতিবেশীদের পরামর্শে বাধ্য হয়ে সেটাই আবার নতুন করে খুলে বসে আলিফ। পেটের টানে শিখে নেয় চা তৈরীর কাজ। যে জীবনটা কাটানোর কথা খুলে বন্ধু-বান্ধবের সাথে মজা করে, সে সময় নিজের হাত পুড়িয়ে রান্না করে খেতে হয় তাকে। মা-বাবা দুজনেই মাঝে মাঝে যোগাযোগ করেন বটে, তবে টাকাপয়সা কেউই পাঠান না। চায়ের দোকান থেকে ৫০-৬০ টাকা রোজগার হয় দিনে, কোন দিন আবার সেটুকুও হয়না। আলিফ বলে, ”মাঝেমধ্যে দাদু খাওয়ার জন্য ডাকে। দাদু না থাকলে দাদি সেভাবে দেখে না। তাই মাঝেমধ্যে মুড়ি খেয়ে থাকি। আবার কোনওদিন পেটে দানাপানিও পড়ে না।”
যদিও ঠাকুমার বক্তব্য অন্য। তার দাবি, ডাকলেও বাড়ি আসতে চায় না আলিফ। তার চায়ের দোকান খুলতে দাদু সাহায্য করেছে বলেও জানান তিনি। এই ঘটনা কানে গেলে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানও। বগপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সহিদুল শেখ বলেন,“বিষয়টা এতটা জানা ছিল না। ছেলেটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পড়াশোনা-সহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”