বাংলা হান্ট ডেস্ক: অদ্ভুত কান্ড ঘটল পূর্ব বর্ধমানে! মাত্র ২৯ মাসের ব্যবধানে একই সরকারি প্রকল্পের দু’বার উদ্বোধন হয়ে গেল সেখানে। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও ঠিক এইরকমই এক অবাক করা প্রসঙ্গ সামনে এসেছে এবার। পাশাপাশি, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও তুললেন বিরোধীরা।
জানা গিয়েছে যে, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতে পথচারীদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত। সেই অনুযায়ী ২০১৯ সালেই তারকেশ্বর-মেমারি রোডের ধারে পানীয় জলের প্রকল্পের এই কাজ শুরু করা হয়। পাশাপাশি ওই বছরের ২২ অক্টোবর মহাসমারোহে শীতল পানীয় জল প্রকল্পের শুভ উদ্বোধনও করা হয়। জামালপুর পঞ্চায়েতের সভাপতি মেহমুদ খান এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
এমনকি সেখানে থাকা ফলকেও বিস্তারিতভাবে সমস্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। পাশাপাশি জানানো হয় ওই প্রকল্পের কাজে খরচ হয় প্রায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও হঠাৎ করেই তিন বছর পর ফের উদ্বোধন করা হল এই প্রকল্পের! শুধু তাই নয়, ফলকে থাকা বিভিন্ন তথ্যও রাতারাতি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। আর তাতেই উঠেছে প্রশ্নের ভিড়।
বর্তমানে ফলকে ২০১৯-এর অক্টোবর থেকে সরাসরি উদ্বোধনের তারিখ হয়ে যায় চলতি বছরের ২২ মার্চ। পাশাপাশি জানানো হয় যে, পঞ্চদশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকাতেই তৈরি হয়েছে এই প্রকল্প। এদিকে রাতারাতি এই পরিবর্তন হওয়ায় অবাক হয়ে গিয়েছেন পঞ্চায়েতের বাকি সদস্যরাও। রীতিমতো প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে এক পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, “উদ্বোধনের পরেও কিভাবে এটা কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকাতে তৈরি হল এর কারণ আমাদের অজানা।”
যদিও পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের সভাধিপতি সকলেই সমস্ত বেনিয়মের অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, সমস্ত নিয়ম মেনেই এই প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূলের সহ-সভাধিপতি দেব টুডু জানিয়েছেন যে, “নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা দেওয়া যায়নি বলেই এই প্রকল্পটিতে পঞ্চদশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়াও পঞ্চায়েত প্রধান শেখ শাহাবুদ্দিন জানিয়েছেন যে, “সকলের সম্মতিক্রমে আমরা এই প্রকল্পের টাকা পঞ্চদশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের তহবিল থেকেই প্রদান করেছি। এখানে কোন বেনিয়ম হয়নি।” যদিও, জেলা বিজেপি অবশ্য এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। একই প্রকল্পের দু’বার উদ্বোধনের মত বিরল ঘটনার পেছনে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি, আর্থিক দুর্নীতির বিষয়েও সরব হয়েছে বিরোধীপক্ষ।