বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমেরিকার মন্দার প্রভাব ভারতের শেয়ার বাজারে (Share Market) দেখা গেল। ব্যবসায়িক সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার শেয়ার বাজার রীতিমতো রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছে। বাজার খোলার সাথে সাথেই আজ ভারতীয় স্টক মার্কেটে পতনের সুনামি ঘটে এবং সেনসেক্স-নিফটি বিধ্বস্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এটি ২০২০ সালের মার্চের পর শেয়ার মার্কেটে (Share Market) সবচেয়ে বড় পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যেখানে বিনিয়োগকারীরা ১৬ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন। তবে, আজকের বাজার পতনের কারণ হল বিশ্ববাজারে দরপতন।
শেয়ার বাজারে (Share Market) বিরাট পতন:
রক্তাক্ত শেয়ার বাজার: মূলত, আমেরিকার বাজারের তীব্র পতনের কারণে, দেশীয় শেয়ার বাজারগুলিতে (Share Market) এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। ব্যাঙ্ক নিফটি ৬৫০ পয়েন্টেরও বেশি ক্ষতির সাথে খোলে এবং ওপেনিং মিনিটে ৮০০ পয়েন্ট কমে ৫০,৫৬০-এ নেমে আসে। এই খবর লেখার সময় পর্যন্ত, সেনসেক্স ২,৫০০ পয়েন্টের বেশি পড়ে গেছে। সোমবার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই শেয়ার মার্কেটে বিপুল পতন ঘটে। BSE-র ৩০-শেয়ার সেনসেক্স সোমবার তার আগের বন্ধের তুলনায় ১,২০০ পয়েন্টের পতনের সাথে ৭৯,৭০০.৭৭-এ খুলেছে। এদিকে, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি-৫০-ও ৪২৪ পয়েন্টের পতনের সাথে ব্যবসা শুরু করেছে। এর আগে গত শুক্রবারও ভারতের শেয়ার বাজারে পতন দেখা গিয়েছিল।
পরবর্তীতে কি হতে চলেছে: এদিকে, এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে মার্কেট এক্সপার্ট অরুণ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন যে, যদি নির্বাচনের ফলাফলের দিনটি বাদ দেওয়া হয় তবে এটি ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর সবচেয়ে বড় পতন। কেজরিওয়ালের মতে, করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর পরে, প্রত্যেকেই মনে করেছিল যে বাজারে সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে। তাই সবাই এতে বিনিয়োগ করা শুরু করেছে। এখন বাজার এটা দেখিয়ে দিয়েছে যে, মার্কেটের (Share Market) চেয়ে বড় কেউ নয়। কেজরিওয়ালের মতে, ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে সংশোধন দেখা যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই।
আরও পড়ুন: অবসরের প্ল্যান করে ফেললেন গৌতম আদানি, কার হাতে যাবে বিশাল সাম্রাজ্য? জানলে হয়ে যাবেন “থ”
আমেরিকায় মন্দার কারণে বাজার ভেঙে পড়েছে: শেয়ার বাজারের (Share Market) এহেন পারফরম্যান্সের কারণ হিসেবে আমেরিকায় ম্যানুফ্যাকচারিং পিএমআই ডেটাতে বড় পতনের বিষয়টি সামনে এসেছে। যেটি আমেরিকায় মন্দা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এছাড়া, সেখানে বেকারের সংখ্যাও রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে আমেরিকার বাজারে। একই সঙ্গে আইটি সেক্টরে ছাঁটাইয়ের ঘোষণার কারণে সঙ্কট আরও গভীর হয়েছে। যার কারণে বিশ্বব্যাপী আইটি সেক্টরও ব্যাপক চাপে রয়েছে। এছাড়া, আরেকটি কারণ হল ব্যাঙ্ক অফ জাপান সুদের হার বৃদ্ধি করায় জাপানের শেয়ার বাজার নিম্নমুখী হয়েছে। অপরদিকে, হামাস প্রধানকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। যার জেরে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা আরও গভীর হয়েছে। এই ফ্যাক্টর বিশ্ববাজারেও প্রভাব ফেলছে। যার প্রভাব দেখা গেছে শেয়ার বাজারে।
আরও পড়ুন: রেপো রেট এবারে বাড়বে নাকি কমবে? কি সিদ্ধান্ত নেবে RBI? অবশেষে সামনে এল বড় আপডেট
বিনিয়োগকারীরা ১৬ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছে: আজ, শেয়ার বাজারের (Share Market) এই পতনে, BSE-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির মার্কেট ক্যাপ ১৬ লক্ষ কোটি টাকা কমেছে। অর্থাৎ, বাজার খোলার সাথে সাথে বিনিয়োগকারীদের সম্পদ ১৬ লক্ষ কোটি টাকা কমেছে। এমতাবস্থায়, BSE-র মার্কেট ক্যাপ ৪৪৪.৩৫ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। গত শুক্রবার, BSE-এর মার্কেট ক্যাপ ছিল ৪৫৭.২১ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু, আজ অর্থাৎ ৫ অগাস্ট ২০২৪-এ বাজার খোলার সাথে সাথে এটি ৪,৪৭,৬৪,৬৯২.৬৫ কোটি টাকায় এসে পৌঁছেছে। এর মানে হল যে, বিনিয়োগকারীদের মূলধন ১৬ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি কমেছে।