ভাঙছে ভারতীয় প্লেট, যে কোনোদিন হতে পারে বিধ্বংসী ভূমিকম্প! প্রকাশ্যে ভয়ঙ্কর রিপোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্ক : দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল ইউরেশিয় প্লেটের নীচে ঢুকে যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট (Indian Plate)। যে কারণে ক্রমাগত উঁচু হয়ে চলেছে হিমালয় পর্বতমালা (Himalayas)। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, তিব্বত মালভূমির (Tibet) নীচে দুই ভাগে ভেঙে যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট। ভূতত্ত্ববিদরা মনে করছেন, হিমালয়ের নীচের ভূতত্ত্ব ঠিক যতটা জটিল মনে হত, এটি তার থেকেও অনেক বেশি জটিল।

বিজ্ঞানীদের দাবি, ক্রমাগত ঘর্ষণ এবং সংঘর্ষের কারণেই ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের উপরের অংশ ক্ষয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, মহাসাগরীয় প্লেট ঘনীভূত হওয়ার সময় সাবডাকশন প্রক্রিয়ায় এটি তুলনামূলক হালকা প্লেটের নীচে ঢুকে যায় এবং একটা লম্বা সময় পর্যন্ত ভূ-বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, ভারতীয় প্লেটটি ইউরেশিয় প্লেটের নীচে ঢুকে যাচ্ছে।

এক্ষেত্রে একটু ঘাঁটাঘাটি করলে সাবডাকশন নামের একটি শব্দ উঠে আসবে। তাহলে কী এই সাবডাকশন?
আসলে যখন কোনও মহাসাগরীয় টেকটোনিক প্লেট ঘনিভূত হয়ে তুলনায় হালকা মহাদেশিয় প্লেটের নীচে ঢুকে যায় এরকম প্রক্রিয়াকে বলে সাবডাকশন। আর এতদিন যে রিপোর্ট বিভিন্ন মিডিয়া বা জার্নালে পাবলিশ হয়েছে সেখানে জানা যেত ভারতীয় প্লেট ‘আন্ডারপ্লেটিং’ প্রক্রিয়ায় ইউরেশীয় প্লেটের নীচে ঢুকে যাচ্ছিল। কিন্তু এবার দেখা দেখা যাচ্ছে সেটা পুরোপুরি সঠিক নয়।

আরও পড়ুন : বিতর্ক তুঙ্গে উঠতেই নয়নতারার মুখে ‘জয় শ্রী রাম’, সোশ্যাল মিডিয়ায় সাফাই গাইলেন শাহরুখ খানের নায়িকা

ভারতীয় প্লেটের নীচের দিকের অংশ ইউরেশীয় প্লেটের নীচে ঢুকে যাচ্ছে বটে কিন্তু তিব্বত এলাকাতে প্লেটের অপরের অংশ ক্রমাগত সংঘর্ষের কারণে বেঁকে ভেঙ্গে যাচ্ছে। জানিয়ে রাখি যে, এই নতুন মডেলের পুরো রিপোর্ট জানা গিয়েছে চিনের ওশান ইউনিভার্সিটির জিওফিজিসিস্ট লিন লিউ-এর নেতৃত্বাধীন গবেষণা দলের তরফে। লিন লিউ-এর দল পরীক্ষা চালান দক্ষিণ তিব্বতের ৯৪টি ব্রডব্যান্ড সিসমিক স্টেশন থেকে।

আরও পড়ুন : পাত্তা পাবেনা KGF, ‘হনুমান’র হিন্দি সংস্করণের আয় দেখলে মাথা খারাপ হবে আপনারও

পরীক্ষার সময় তারা ‘Up and Down’ S-Wave এবং শিয়ার-ওয়েভ থেকে প্রাপ্ত সমস্ত তথ্যকে P-Wave এর সাথে একত্রিত করে পৃথিবীর সুগভীরে থাকা প্লেটের চিত্র তৈরি করেন। আর সেখান থেকে জানা যাচ্ছে যে, ভারতীয় প্লেটের নীচের অংশ সাধারণত ২০০ কিমি গভীর। কিন্তু এই প্লেটের ওপরের দিকের কিছু স্থানের গভীরতা মাত্র ১০০ কিমি! এই পর্যবেক্ষণের পরই গবেষক দল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, উপরের দিকে প্লেটের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে।

আরও পড়ুন : এবার দেড়শো বইয়ের লক্ষ্য নিলেন লেখিকা মমতা, কলকাতা বইমেলায় এসে ঘোষণা করলেন নিজেই

উল্লেখ্য যে, গত ২০২২ সালেই দুই প্লেটের সীমানা খুঁজে বের করার জন্য তিব্বতের উষ্ণ প্রস্রবনগুলিতে পরীক্ষা চালান কোথায় কতখানি হিলিয়াম বুদবুদ তৈরি হচ্ছে। এই নিয়ে একখানা মানচিত্র তৈরী করেন তারা। সমস্ত ভূ-রাসায়নিক গবেষণাগুলি ইঙ্গিত দেয় ভারতীয় প্লেট ভেঙ্গে যাওযার। তবে প্লেটের এমন ক্ষয়ক্ষতির জন্য পৃথিবীর বুকে কতখানি চাপ তৈরী হচ্ছে সেই নিয়ে তেমন কিছু জানানো হয়নি রিপোর্টে।


Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর