সাবধান হন এখনই! একাধিক প্রকল্পের ধাক্কায় বাংলারও অবস্থা হতে পারে শ্রীলঙ্কার মতো

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলার কোষাগারের অবস্থা যে ক্রমশ বেহাল হয়ে পড়ছে তা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন প্রকল্প চালাতে গিয়েও যে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে তাও বলেছেন তিনি। যে কারণে বারংবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ কমানোর পথে হেঁটেছে রাজ্য।

এমতাবস্থায়, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রকল্পের ধাক্কায় রাজ্যের ভাঁড়ার যে ক্রমশ শেষের পথে তা মনে করছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবরাও। এমনকি, সপ্তাহের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবদের বৈঠকে এই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়েছে, তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কিছু রাজ্যের সরকার যে ভাবে সাধারণ মানুষদের মন জিততে বিপুলহারে খরচ করছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে তাদের হাল শ্রীলঙ্কা বা গ্রিসের মতো হতে পারে।

এদিকে, ওই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ উঠে এলেও রাজ্য সরকারের কেউ অবশ্য এতে মুখ খোলেননি। তবে, ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। এই প্রসঙ্গে সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ রামগোপাল যাদব জানিয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই। খাদ্য নিগমের ভর্তুকি বাবদ ৪.২৭ লক্ষ কোটি টাকা দু’বছর ধরে বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারেরই তো এখন দেউলিয়া অবস্থা।’’

পাশাপাশি, পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। তাদের বক্তব্য, বিজেপিও উত্তরপ্রদেশ, গোয়ার মতো রাজ্যে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ সহ একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু, তার জন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কোষাগারে কি প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে কেন্দ্রের সচিবরা প্রধানমন্ত্রীর সামনে আদৌ কি মুখ খুলেছেন? পাশাপাশি, আরও জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবরা কেন হঠাৎ রাজ্যের কোষাগার নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন, তা তাঁদেরই জিজ্ঞাসা করা উচিত।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যে একাধিক প্রকল্পের জেরে সরকারের বিপুল খরচ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঋণের পরিমানও। রাজ্যের বাজেট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের শেষে রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা ৫.৮৬ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছবে। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গে “লক্ষ্মীর ভান্ডার”-এর মতো মানুষের হাতে নগদ অর্থ সাহায্য তুলে দেওয়ার প্রকল্পে সরাসরি বাজেটের ওপর চাপ পড়েছে। যদিও, এইসব প্রকল্পের ওপর ভর করেই রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে তৃণমূল।

এদিকে, রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রেরও ঋণের পরিমান করোনা মহামারীর আবহে অনেকটাই বেড়েছে। যদিও, সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও দিল্লি, পাঞ্জাব, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের কোষাগারের হাল নিয়েও উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবরা। ভোটের আগে দেওয়া একাধিক প্রতিশ্রুতি পালন করতে গিয়েই রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে সরকারকে।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X