বাংলা হান্ট ডেস্ক: এ যে অবিশ্বাস্য! ঘরে বসেই মিলল অরোরার দেখা। না কোনও মজা ইয়ার্কি নয়, দস্তুর মত মেরুজ্যোতির (Aurora In India) দেখা মিলল ঘরের জানালা দিয়েই। ভারতে বসেই নর্দার্ন লাইটের (Northern Lights) জৌলুসের সাক্ষী রইল অনেকেই। হয়ত এমন মহাজাগতিক দৃশ্যের কথা কেউ কল্পনাও করতে পারছেন না, তবে এটাই সত্যি এবং এটাই ঘটেছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে সৌরঝড় (Solar Storm)। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০০৩ সালের পর এমন সৌরঝড় আর দ্বিতীয়বার হয়নি।
মূলত এটি হল সূর্যের বিশেষ চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের পরিবর্তন, অর্থাৎ সোলার স্টর্ম ধাক্কা মেরেছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে৷ আর তাতেই বদলে গেছে পৃথিবীর আকাশ। রাতভর আকাশ জুড়ে তাণ্ডব চালাল অরোরা বোরিয়ালিস ও অরোরা অস্ট্রালিস। আকাশজুড়ে এঁকে দিল আলোর খেলা। লাল, সবুজ, সহজে নীলের মত বাহারি রঙের নিচে চাপা পড়ে গেল রাতের অন্ধকার।
এমন বিরল দৃশ্যের সাক্ষী রইল ভারতও। এইদিন ভারতের লাদাখ থেকে দেখা গেছে অরোরা বোরিয়ালিস বা মেরুজ্যোতি। যে সুইজারল্যান্ডে কখনোই মেরুজ্যোতি দেখা যায়না এইদিন সেই সুইজারল্যান্ডের আকাশেও চলল আলোর খেলা। মেরুজ্যোতির ছটা দেখল আমেরিকার টেক্সাস, ক্যারোলাইনা, জর্জিয়ার মতো ‘দক্ষিণী’ প্রদেশ, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি ইত্যাদি।
আরও পড়ুন:PoK-তে যুদ্ধের পরিস্থিতি! পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাস্তায় হাজার হাজার কাশ্মীরি, চলছে এলোপাথাড়ি গুলি
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বহু বছর পর এমন শক্তিশালী সৌরঝড় দেখল পৃথিবী। যাকে বলা হচ্ছে জি-ফাইভ গোত্রের জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম। এবার ছোট করে বুঝে নেওয়া যাক মেরুজ্যোতি বা অরোরা কখন দেখা যায়?
সোলার স্টর্ম বা সৌরঝড় পৃথিবীর ত্রিসীমানায় আসার সাথে সাথেই তাকে বাধা দেয় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র। তবে বাকি এলাকায় বাধা পেলেও নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমান্তরাল রাস্তা দিয়ে খুব সহজেই পৃথিবীতে ঢুকে যায় আধান যুক্ত কণার একটা স্রোত। এরপর সেই কণার সাথে অবিরাম সংঘর্ষে লিপ্ত হয় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন। এরপর আর কী? ইলেকট্রনের আদানপ্রদান এবং বেশকিছু পরিবর্তনের পর আকাশ জুড়ে শুরু হয় রঙের খেলা। কোথাও আকাশ জুড়ে লালের আধিপত্য তো কোথাও আবার সবজে নীল তো কোথাও সবুজ। যা দেখে চোখ জুড়ায় আমার আপনার সকলেরই।
আরও পড়ুন:‘ওরে বাপরে বাপ’! প্রচার সারতে লোকাল ট্রেনে রচনা, ‘আর আসবেন’? উত্তরে যা বললেন…
গবেষণা বলছে, গত ২১ বছরে এমন সৌরঝড় হয়নি। এই বিষয়ে ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের ডিরেক্টর সন্দীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সাময়িকভাবে চোখের তৃপ্তি হলেও আশঙ্কাও বাড়াচ্ছে এই বিরল অরোরা। কারণ এ থেকে একটা কথা স্পষ্ট যে, সূর্যের একটা বিরাট অংশ এখন সক্রিয়। বিপুল পরিমাণ চৌম্বক শক্তি বেরিয়ে আসছে সেখান থেকে। তাই আশঙ্কাও বাড়ছে ক্রমশই। বিশেষ করে এতে মহাকাশে ভাসমান স্যাটেলাইটগুলির অবস্থা খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক দেশ সাময়িকভাবে তাদের স্যাটেলাইট বন্ধ করেছে। ভারতের আদিত্য এল-১ কেমন আছে তারও খোঁজ চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।