৯ বছর আগে হারিয়ে গেছিল ছেলে, ১৯ বছর বয়সে বাড়ি ফিরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ল পিতা-ছেলে

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ইন্টারনেট (Internet) এমন একটি মাধ্যম, যা যেমন অনেক খারাপ কাজেও ব্যবহার করা হয়, তেমই কিন্তু এই ইন্টারনেটের ভালো কাজের সংখ্যাও অসীম। এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষ দেশ বিদেশের নানা অজানা অদেখা তথ্যও জানতে পারে। তবে এই ইন্টারনেটই যে হারিয়ে যাওয়া পরিবারকে এক করে দেবে তা কোন দিনই ভাবতে পারেনি উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) ফারুখাবাদের বাসিন্দা তাহির আলি।

হারিয়ে যায় ছোট আবদুল
আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগের কথা। উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের বাসিন্দা তাহির আলি তাঁর বছর ১০-এর ছেলে আবদুলকে সঙ্গে নিয়ে কয়েকদিনের জন্য গাজিয়াবাদে নিজের ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ঘটে যায় এক বিপত্তি। বাড়ি ফেরার পথে ভুল বাসে উঠে পড়ায় হারিয়ে যায় বছর ১০-এর ছোট আবদুল। পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। খুঁজে পাওয়া যায়না আবদুলকে।

shkikh

বাড়িতে নিয়ে যায় এক শিখ পরিবার
পরবর্তীতে শোনা গিয়েছিল, ভুল বাসে উঠে পড়ায় এক ট্রাক ড্রাইভার ফতেগড় সাহিবে আবদুলকে নামিয়ে দেয়। সেখানেরই একটি দোকানে ছোট্ট আবদুলকে দেখতে পায় গুরনাম সিং। সেদিন নিজের এবং বাবার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনি আবদুল। খাবার খাইয়ে সেই অসহায় ছোট বাচ্চাটাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান গুরনাম সিং।

সেখানেই মানুষ হয় আবদুল
জেলা প্রশাসনের সাহায্যে আবদুলকে সর্বশিক্ষা অভিযানের অধীন একটি স্কুলে ভর্তিও করে দেন তারা। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর তাঁকে পাটিয়ালার একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন তারা। সেখানেই থাকতে শুরু করে আবদুল। গুরনাম সিং জানিয়েছেন, ‘আবদুল মুসলিম ধর্মের হওয়ায়, প্রথমে অনেকে আপত্তি জানিয়েছিল। এমনকি অনেকে বলেছিলেন, ওকে শিখ ধর্মে দীক্ষিত করতে। কিন্তু আমি তা করিনি। আমাদের বাড়ির সদস্য ছিল আবদুল। আমি মসজিদেও নিয়ে জেতাম’।’

muslim 3

ফিরে পায় পরিবারকে
লকডাউনের মধ্যে একদিন আবদুল ইন্টারনেট পড়তে পড়তে তাঁর গ্রামের এক পুরনো বন্ধুর দেখা পায়। তাঁর সাথে ফেসবুকে যোগাযোগের মাধ্যমেই প্রায় দীর্ঘ ৯ বছর পর আবারও তাঁর বাবা মাকে ফিরে পায় আবদুল। হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পেয়ে, খুশি তাঁর পরিবারের লোকজনও। ছেলেকে ফিরে পেয়ে গুরনাম সিংকে অনেক ধন্যবাদও জানান তাহির আলি।


Smita Hari

সম্পর্কিত খবর