বাংলা হান্ট ডেস্ক: যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমান সময়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে ভারত। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত বুধবার বিশাখাপত্তনমে সম্পন্ন হওয়া একটি অনুষ্ঠানে INS নির্দেশক (INS Nirdeshak)-কে ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
চমকে দেবে INS নির্দেশকের (INS Nirdeshak) বিশেষত্ব:
জানিয়ে রাখি যে, INS নির্দেশক (INS Nirdeshak) হল সার্ভে ভেসেল (লার্জ) প্রকল্পের দ্বিতীয় জাহাজ। যেটিকে কলকাতার GRSE (Gaeden Reach Shipbuilders & Engineers Limited) দ্বারা ৮০ শতাংশেরও বেশি দেশীয় সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই জাহাজের ডিজাইন এবং নির্মাণ ভারতের দক্ষতা ও নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার বিষয়টিকে স্পষ্ট করে।
উল্লেখ্য যে, INS নির্দেশক (INS Nirdeshak)-এর সর্বোচ্চ গতি ১৮ নটের বেশি এবং এই জাহাজ একটানা ২৫ দিন সমুদ্রে থাকতে পারে। এটি একটি হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে ভেসেল (জাহাজ)। যা সমুদ্রের তলদেশে সার্ভে করবে এবং নেভিগেশন চার্ট তৈরি করবে। বিশ্বের সমস্ত দেশের যুদ্ধজাহাজ এবং পণ্যবাহী জাহাজ ভারত মহাসাগর অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যায় শুধুমাত্র ভারতের তৈরি হাইড্রোগ্রাফি চার্টের মাধ্যমে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে একমাত্র ভারতের কাছেই এই প্রযুক্তি রয়েছে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ টেস্টের আগেই ভারতের ঘুম ওড়ালেন কামিন্স! সামনে আনলেন “মেগা প্ল্যান”, মাথায় হাত রোহিতদের
নেভিগেশন চার্ট কেন প্রয়োজনীয়: জানিয়ে রাখি যে, নেভিগেশন চার্টগুলি এইজন্য প্রয়োজনীয় কারণ সমুদ্রের পৃষ্ঠ সমান নয়। কিছু জায়গায় তা গভীর এবং কিছু কিছু জায়গায় গভীরতা অত্যন্ত কম থাকে। এমতাবস্থায়, হাইড্রোগ্রাফিক ম্যাপ এটা নিশ্চিত করে যে প্রতিটি জাহাজ যাতে সমুদ্রে সঠিক পথে চলাচল করতে পারে ও দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে। INS নির্দেশক (INS Nirdeshak) নতুন স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নেভিগেশন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করবে। এর পাশাপাশি অত্যাধুনিক সেন্সরগুলি নির্ভুলতার সাথে সমুদ্রের গভীরতা এবং এর ভূখণ্ডের মানচিত্র ও চার্ট তৈরি করতে সক্ষম হবে। তাই “নির্দেশক”-কে সমুদ্রের “পথ প্রদর্শক” হিসেবে বিবেচিত করা হচ্ছে।
রয়েছে কি কি বিশেষত্ব: “INS নির্দেশক (INS Nirdeshak) ১১০ মিটার লম্বা এবং এটির ওজন প্রায় ৩,৮০০ টন। এই জাহাজে দু’টি ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে। পাশাপাশি, এই জাহাজটি ভারতের সামুদ্রিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের সামুদ্রিক এলাকার মানচিত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই প্রসঙ্গে নৌবাহিনীর মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিবেক মাধওয়াল জানিয়েছেন যে, এই জাহাজ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতের আত্মনির্ভরতার বিষয়টিকে স্পষ্ট করে। এই জাহাজটির মাধ্যমে ভারতের প্রথম INS নির্দেশক-এর পুনর্জন্ম ঘটছে। যেটি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে ভারতীয় নৌবাহিনীতে কাজ করেছে এবং ২০১৪ সালে সেটিকে ডিকমিশন করা হয়। এদিকে, এখন INS নির্দেশক-এর কমিশনিং ভারতীয় নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক বহরের আধুনিকীকরণে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।