বাংলা হান্ট ডেস্ক : কেউ বলেন বনদূর্গা। কারও কাছে বনদেবী। পুজো এখানে হয় পাথরে। ব্রাহ্মণ পুরোহিতের পুজো নয়। শবরদের দুর্গা পুজো পান শবরদের হাতেই। ঝাড়গ্রামের গুপ্তমনি মন্দিরে প্রায় সাড়ে চারশো বছরের প্রথা মেনে আজও পুজো হচ্ছে । কথিত আছে, উমা ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে গুপ্ত অবস্থায় ছিলেন । গোপন-পথ পাহারায়। মহারাজ মল্লদেব অথবা শবর অধিপতি দেবীর নাম দেন গুপ্তমনি। মিথ-গল্পের মিলমিশে এক অন্য পুজোর গল্প শোনা যায় ঝাড়গ্রামের ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে গুপ্তমনিতে।রাজপ্রাসাদটি জঙ্গল ঘেরা । ঝাড়গ্রামের রাজা নরসিংহ মল্লদেব রাজস্ব ও রাজ্য রক্ষার জন্য গুপ্তপথ তৈরি করেন।
মল্লরাজগুপ্তপথে অতর্কিত হামলায় বহু যুদ্ধও জয় করেন । তবে মল্লদেবের এত প্রতিপত্তি, যাদের হারিয়ে ,সেই শবরপতি নন্দ ভুক্তা সেই পথ।আবিষ্কার করে ফেলেন , সেখান থেকেই গল্পের শুরু। রাজার হারিয়ে যাওয়া হাতির খোঁজ মেলে গুপ্তপথের সামনে। গাছের লতাপাতা দিয়ে বাঁধা রাজহস্তি। মল্লদেব বোঝেন, শবরপতি নন্দ ভুক্তা গুপ্তপথের হদিশ পেয়ে গিয়েছেন। তখনই কৌশল করেন সন্ধির। যদিও এ গল্পে জড়িয়ে আছে স্বপ্নাদেশের মিথ।
জঙ্গলের ওই গোপন পথ রক্ষার ভার রাজা শবরদেরই দেন। বীর শবররাই বুক দিয়ে আগলে রাখেন রাজমহল। সেই থেকে শুরু গুপ্তমনির পুজো। এখানে পুজো হয় পাথরের। গুপ্তপথের আড়াল রেখেছে যে পাথর। ওই পাথরের উপরই ঘট বসিয়ে হয় পূজার্চনা। এই মন্দিরে চন্ডীপাঠ হয় না। যে যেভাবে পারেন , সেভাবেই পুজো দেন। মন্দিরে জ্বলে শুধুই মোমবাতি আর প্রদীপ। স্থানীয়দের দাবি , মন্দিরের ভিতর বহুবার বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হলেও,টেকেনি তা। প্রাচীন মন্দিরের শরীর জুড়ে নানা পৌরাণিক ছবি। রহস্যে ঢাকা গুপ্তমনিতে এখন আগমনীর সুর।