বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারোত্তোলনে রৌপ্য পদক জিতে ভারতের টোকিও অলিম্পিক সফর দুর্দান্তভাবে শুরু করতে সাহায্য করেছিলেন মীরাবাঈ চানু। তারপর দ্বিতীয় রৌপ্য পদক জয় করে গোটা ভারতকে আনন্দে মাতিয়ে দিয়েছিলেন কুস্তিগীর রবিকুমার দাহিয়া। ৫৭ কিলোগ্রাম বিভাগের ফাইনালে পরাজয়ের সম্মুখীন হলেও ফাইনাল জয়ের কারণে আগে থেকেই রৌপ্য পদক নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। রবি কুমার দাহিয়ার জীবন কাহিনী এখন প্রায় সকলেরই জানা। ছোট্টবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে অলিম্পিকের পোডিয়াম পর্যন্ত যাত্রা করতে হয়েছে তাকে।
আজকের এই অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগীর হয়তোবা কুস্তিকে বেছেই নিতেন না খুব ছোটবেলায় তার মধ্যে কুস্তির নেশা ঢুকিয়ে দিতেন গ্রামেরই এক সন্ন্যাসী। মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবার হাত ধরে ব্রহ্মচারী হংসরাজের আখড়া প্রথমবার পা রাখেন রবিকুমার দাহিয়া। হংসরাজের কাছেই কুস্তির প্রথম পাঠ, তারপর গুরুর হাত ধরেই ছত্রপাল স্টেডিয়ামে পৌঁছান তিনি। প্রায় ছয় বছর হংসরাজের কাছে কুস্তির পাঠ নিয়েছিলেন রবি কুমার দাহিয়া। এখনও তার কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। এমনকি দিল্লিতে সম্বর্ধিত হবার সময়ও জীবনের এই প্রথম গুরুর কথা উল্লেখ করেন পদকজয়ী কুস্তিগীর।
খুবই সাধারণ জীবনযাপন করেন হংসরাজ। তিনি বিবাহ করেননি। এমনকি কুস্তি শিখিয়ে কারও কাছে টাকাও নেন না। গ্রামের লোকজন যা দেন তাতেই তার চলে যায়। হংসরাজ বলেন, “আমি খুব ভালো কুস্তিগীর ছিলাম না। আমার বড় স্বপ্ন ছিল, কিন্তু তা আমি পূরণ করতে পারিনি। ভগবানের অশেষ করুনা আজ আমার ছাত্র পদক নিয়ে এলো। আমি কখনও জনপ্রিয় হবার স্বপ্ন দেখি নি। আমি সব সময় প্রচার-প্রসার থেকে দূরে থেকেছি এবং বাচ্ছাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজকেই গুরুত্ব দিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, লোকে তার কাছে ছেলেমেয়েদের পাঠায় তাদের অনুশীলন এবং অনুশাসন শেখানোর জন্য। তাদের অনেক ছাত্রই আজ জাতীয় স্তরে পদকজয়ী। এমনই একদিন ৬-৭ বছর বয়সী রবি কুমার তার বাবার সঙ্গে আখরায় আসেন। হংসরাজ আরও জানিয়েছেন, তার প্রথম থেকে কুস্তির আখড়া খোলার ইচ্ছে ছিল না। ইচ্ছে ছিল সাধনা করার, কিন্তু গ্রামবাসীর ইচ্ছাতেই আখড়া নির্মাণ করেন তিনি। আর আজ সেখান থেকেই জন্ম নিল রবির মত অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগীর।