ডেলিভারি বয় থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার! এই যুবকের উত্তরণের কাহিনি অনুপ্রাণিত করবে সবাইকে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনকে সুন্দরভাবে এবং নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে প্রত্যেকেই ভাল অঙ্কের রোজগার করতে চান। যার জন্য কেউ কেউ বেছে নেন চাকরির পথ আবার কেউ ভরসা করেন ব্যবসায়িক দিককেই। তবে, অর্থ উপার্জনের জায়গা তৈরি করার ক্ষেত্রে সবাইকেই করতে হয় অদম্য পরিশ্রম। এমনকি কিছু কিছু সময় সফলতার স্বাদ গ্রহণের জন্য এক অনন্য উত্তরণের কাহিনিও তৈরি করে ফেলেন অনেকেই। ঠিক যেমন ঘটেছে শাইক আব্দুল সাথরের সাথেও। এক ডেলিভারি বয় থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বর্তমানে সকলের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন শাইক। আর সেই সাফল্যের কাহিনিই তুলে ধরা হল বর্তমান প্রতিবেদনে।

ইতিমধ্যেই একটি লিঙ্কডইন পোস্টে, শাইক তাঁর জীবনের লড়াইর কাহিনি উপস্থাপিত করেছেন। যেখানে তিনি তাঁর লড়াইয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরেছেন। এমনকি, ইতিমধ্যেই তাঁর এই স্মৃতিচারণ জিতে নিয়েছে সকলের মন। পোস্টটি চরম ভাইরাল হতেও শুরু করেছে।

সেই পোস্টে তিনি জানিয়েছেন “আমি একজন ডেলিভারি বয় ছিলাম, যার কাছে স্বপ্ন ছিল। Ola, Swiggy, Uber, Rapido, Zomato-কলেজের শেষ বছর থেকে সর্বত্রই ছিলাম আমি। আমার বাবা একজন সাধারণ চুক্তিভিত্তিক কর্মী থাকায় আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আর্থিকভাবে অবদান রাখতে চেয়েছিলাম। আমি শুরুতে ভীত ছিলাম, কিন্তু ডেলিভারি বয়ের কাজ আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।”

পাশাপাশি, তাঁর চলার পথের যাত্রা সকলের সাথে ভাগ করে শাইক জানিয়েছেন, “একদিন, আমি কোডিং শেখার জন্য একটি পরামর্শ পেয়েছিলাম। আমার বন্ধু আমাকে এই কোর্স সম্পর্কে বলেছিল এবং আমাকে তাতে যোগ দেওয়ার জন্য জোরও করেছিল। আমি তার পরামর্শটি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে কোডিং শেখার জন্য আমার সকালগুলো কাটিয়েছি।”

এছাড়াও, নিজের কাজের প্রতি তাঁর দায়িত্ব পালনের প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত, আমি ডেলিভারি বয়ের কাজ করেছি। সেখান থেকে যে অর্থ উপার্জন করতাম, তা দিয়ে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি, পরিবারের খরচেও সামান্য যোগদান করতাম। শীঘ্রই আমি নিজেই একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে সক্ষম হই। পাশাপাশি, কয়েকটি প্রোজেক্ট করে কোম্পানিগুলির কাছে আবেদন করতে শুরু করি।”

এই প্রসঙ্গে শাইক ডেলিভারি বয়ের কাজ করে অত্যন্ত গর্বিত বলেও জানান। তাঁর মতে, “ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা আমার কমিউনিকেশন স্কিল তৈরি করতে সাহায্য করেছে এবং আমি NxtWave-এর সাহায্যে কোডিংয়ে দক্ষতা তৈরি করেছি। তারপরেই আমি একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে প্রোব ইনফরমেশন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডে স্থান পাই। একটা সময় ছিল যখন আমাকে প্রতিটি টাকার হিসেব নিয়ে সতর্ক থাকতে হত আর আজ আমি এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি যেখানে মাত্র কয়েক মাসের বেতন দিয়েই বাবা-মায়ের করা ঋণ পরিশোধ করতে পারি।”

এদিকে, শাইকের এই সফলতার কাহিনি ইতিমধ্যেই লিঙ্কডইনে ঝড় তুলেছে। দু’হাজারেরও বেশি জন তাঁকে শুভকামনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তাঁর এই কাহিনি যে হাজার হাজার জনকে অনুপ্রাণিত করবে সেই প্রসঙ্গও উপস্থাপিত করেছেন তাঁরা।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর