ছাত্রীর প্রেমে অন্ধ স্কুলের শিক্ষিকা! লিঙ্গ পরিবর্তন করে ছেলে হয়ে করেই ফেললেন বিয়ে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) দৌলতে আমরা বিয়ে সংক্রান্ত নানান অবাক করা ঘটনার প্রসঙ্গ জানতে পারি। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার আরও একটি চমকপ্রদ বিবাহের ঘটনা উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। যেটি জানার পর স্তম্ভিত হবেন যে কেউই। মূলত, রাজস্থানের (Rajasthan) ভরতপুর থেকে এই ঘটনাটি সামনে এসেছে। ওই জেলার ডিগ তহসিলের নাগলা মতি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মীরা কুন্তল (এখন আরভ) নামের শরীরশিক্ষার এক শিক্ষিকা সদ্য লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ হয়েছেন। এমতাবস্থায়, বর্তমানে তিনি সবার কাছে মীরার বদলে আরভ কুন্তল নামে সমধিক পরিচিত। উল্লেখ্য যে, মীরা মহিলা হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর আচরণ ছিল পুরুষদের মতই।

চিকিৎসকদের মতে, এই অবস্থাকে ডিসফোরিয়া বলা হয়। ২০১৯-এর ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ পর্যন্ত দিল্লির একটি হাসপাতালে লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন মীরা। এদিকে, ওই সময়টাতে মীরার ছাত্রী কল্পনা তাঁর পুরো যত্ন নেন। আর তখনই তাঁরা দু’জনে একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। শুধু তাই নয়, সেই প্রেমকে পূর্ণতা দিতে গত ৪ নভেম্বর গাঁটছড়া বাঁধেন কল্পনা ও মীরা (আরভ)। এই প্রসঙ্গে মীরার বাবা ভিরি সিং জানান, মীরা তাঁর চার মেয়ের মধ্যে সবার ছোট। তবে, মীরা এবার তাঁর বোনেদের কাছ থেকে রাখি বেঁধেছেন। এমনকি, তাঁর ভাগ্নেরা তাঁকে “মামা” বলেও ডাকে বলে জানা গিয়েছে।

কল্পনা খেলতে দুবাই যাবেন: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, কল্পনা হলেন কাবাডির একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়। তিনি ডিগের নাগলা মতি গ্রামের বাসিন্দা। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে তাঁর কাবাডি কোচ মীরা কুন্তলের (বর্তমানে আরভ) সহযোগিতায় তিনি রাজ্য স্তরে প্রথমবার খেলার সুযোগ পান। এছাড়া, কল্পনা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতেও রাজ্য স্তরে খেলেন। পাশাপাশি, ২০২১ সালে স্নাতকের পড়াশোনা চলাকালীন তিনি জাতীয় স্তরেও তাঁর ক্ষমতা প্রদর্শন করেন। এমতাবস্থায়, কল্পনা আগামী জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক প্রো-কাবাডিতে অংশ নিতে দুবাই যাবেন বলেও জানা গিয়েছে।

মীরাও একজন জাতীয় খেলোয়াড়: ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষকতা শুরু করেন মীরা। পাশাপাশি, তিনিও একজন জাতীয় খেলোয়াড়। তিনি ক্রিকেটে জাতীয় স্তরে তিনবার এবং হকিতে চারবার খেলেছেন। বর্তমানে মীরা তাঁর স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাবাডি ও ভলিবলের কোচিং দেন।

কি জানালেন পাত্রী: এই প্রসঙ্গে কল্পনা জানিয়েছেন, “মীরা আমার স্কুলে শারীরিক শিক্ষিকা ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করে যুবকে পরিণত হন। আমাদের দু’জনের মধ্যে প্রেম ছিল। তাই আমরা বিয়ে করেছি। এই বিয়েতে দুই পরিবারই খুব খুশি।”

কি জানালেন মীরা: লিঙ্গ পরিবর্তন করার পর স্বাভাবিকভাবে মীরা তাঁর নামটিও পরিবর্তন করেন। তিনি জানিয়েছেন, “আমি একটি সরকারি স্কুলে শরীরশিক্ষার শিক্ষক। ওই গ্রামের ছাত্রী কল্পনা খেলায় খুব ভালো। আমরা দু’জনেই প্রেমে পড়ে যাই। আমি প্রথমে একটি মেয়ে হয়ে জন্মেছি। কিন্তু আমি অনুভব করি যে, আমি আসলে একজন ছেলে। তাই আমি আমার লিঙ্গ পরিবর্তন করি এবং আমার ছাত্রী কল্পনাকে বিয়েও করি।” উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই তাঁদের বিয়ের ছবি ভাইরাল হতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর