বাংলা হান্ট ডেস্ক: ফের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সম্প্রতি রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের খাতায় একের পর এক চমক দেখা গিয়েছিল। এমনকি, বর্তমানের জনপ্রিয় সিনেমা “পুষ্পা: দ্য রাইজ”-এর ডায়লগ অনুসরণ করে “আপুন লিখেগা নেহি”-বলেও সাফ জানিয়ে দেয় এক পরীক্ষার্থী। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার আরও এক রাজ্যে উঠে আসছে পরীক্ষার্থীদের খাতার অবাক করা ছবি।
সম্প্রতি গোরক্ষপুরে উত্তরপ্রদেশ বোর্ডের পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। সেখানেও একের পর এক খাতায় পরীক্ষার্থীদের অদ্ভুত সব কাণ্ড সামনে আসতে শুরু করেছে।
একাধিক খাতা থেকে পাওয়া যাচ্ছে টাকা:
ইতিমধ্যেই গোরক্ষপুরে খাতা দেখার একটি কেন্দ্র থেকে উত্তরপত্রে টাকা পাওয়া গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানিয়েছেন, “কোনো খাতায় আটকানো টাকার সঙ্গে এটাও লেখা আছে যে, স্যার আমাকে পাশ করিয়ে দিন, আমি সারাজীবন এভাবেই সেবা দিয়ে যাবো। আবার কেউ লিখেছে যে স্যার আমি খুব গরিব পরিবারের ছেলে। তাই আমাকে পাশ করিয়ে দিন।”
অনেকেরই উত্তরপত্র সম্পূর্ণ ফাঁকা:
বর্তমানে গোরক্ষপুরের ৫ টি কেন্দ্রে উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সেখানে একটা বিষয় ক্রমশ দেখা গিয়েছে যে, সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় পেয়েও অধিকাংশ পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রে কিছুই লেখেনি। এমতাবস্থায়, গোরক্ষপুরের যে সমস্ত স্কুলে বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সেখানে থাকা বাকি উত্তরপত্রগুলি জুবিলি ইন্টার কলেজে জমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে একজন জানিয়েছেন, এবার খুব কম শিক্ষার্থীই “বি কপি” নিয়েছে। তাই সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছিল। যা জমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
DIOS- পৌঁছে যান সমস্ত কেন্দ্রে:
গত বুধবার, ডিআইওএস জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং ভাদৌরিয়া একে একে সমস্ত কেন্দ্র পরিদর্শন করতে যান। এছাড়াও, তিনি শিক্ষকদের সঙ্গেও কথা বলেন। পাশাপাশি, মূল্যায়নে নিয়োজিত শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেন তিনি।
মূল্যায়নের গতি কম:
গোরক্ষপুরে গত ২৩ এপ্রিল থেকে উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। যা চলবে আগামী ২ মে পর্যন্ত। যদিও, বর্তমানে মূল্যায়ন ধীরগতিতে চলছে। এই প্রসঙ্গে জুবিলির অধ্যক্ষ নন্দ প্রসাদ যাদব জানান, ইন্টারের বিজ্ঞান শিক্ষকরা জেলার বাইরের স্কুলে গিয়ে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নিতে গিয়েছেন। ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এই পরীক্ষা চলবে। যে কারণে এখন সমস্ত উত্তরপত্র যাচাই করা হচ্ছে না।
অনলাইন ক্লাসের কারণে পড়ুয়াদের লেখার ক্ষমতা কমে গিয়েছে:
এছাড়াও, জুবিলি ইন্টার কলেজের অধ্যক্ষ নন্দ প্রসাদ যাদব আরও জানান, করোনার সময়ে অনলাইন ক্লাস চলার কারণে পড়ুয়াদের লেখার ক্ষমতা কমে গেছে। এই কারণেই এবারের পরীক্ষায় অধিকাংশ পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র পূরণ করতে পারেনি। অপরদিকে, এমএসআই ইন্টার কলেজের অধ্যক্ষ জাফর আহমেদ বলেন, কিছু কিছু পরীক্ষার্থী ভালো উত্তর লিখেছে। কিন্তু বেশির ভাগই উত্তরপত্রে ঠিকঠাক লিখতে পারেনি। মূলত, অনলাইনে পড়াশোনার কারণে লেখার ওপর প্রভাব পড়েছে।
কোথায় কোথায় চলছে উত্তরপত্রের মূল্যায়ন:
আপাতত জুবিলি ইন্টার কলেজ, মারওয়ার ইন্টার কলেজ, এমএসআই ইন্টার কলেজ, এমপি ইন্টার কলেজ ও সেন্ট অ্যান্ড্রুস ইন্টার কলেজে চলছে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ।