বাংলা হান্ট ডেস্ক: সিনেমা এমনই একটি মাধ্যম যা সাধারণত নির্মিত হয় বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই। আবার কখনও কখনও এই সিনেমা থেকেই প্রভাবিত হন সাধারণ দর্শকেরাও। তবে, সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে যা রীতিমত টেক্কা দিয়েছে সিলভার স্ক্রিনের স্ক্রিপ্টকেও।
স্কুল থেকেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন শ্রীকান্ত এবং সোনামনি। কিন্তু, ভাগ্যের পরিহাসে বাড়ি থেকে মেনে নেওয়া হয়নি তাঁদের ওই সম্পর্ক। এমনকি, বিয়েও দিয়ে দেওয়া হয় সোনামনিকে। কিন্তু, তারপরও প্রেমিককে ভুলতে পারেননি তিনি। ঘটনাচক্রে বাপেরবাড়িতে নিজের পুরোনো প্রেমিকের সঙ্গেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোনামনি।
তবে, তাঁরা দু’জনেই জানতেন যে তাঁদের এই প্রেম কখনই স্বীকৃতি পাবেনা। যে কারণে তাঁরা নিয়ে নেন চরম সিদ্ধান্ত। গলায় ফাঁস লাগিয়ে একইসাথে আত্মঘাতী হন ওই যুগল। আর এই ঘটনাই অবাক করে দিয়েছে সকলকে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর থানার সুবোধপুর এলাকায়। মৃত গৃহবধূর নাম সোনামনি প্রধান (২৪) এবং তাঁর প্রেমিক হলেন শ্রীকান্ত সামন্ত (২৫)। তাঁর বাড়ি ভগবানপুর থানার পশ্চিম ঘোষপুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে যে, স্কুলে পড়াকালীনই শ্রীকান্তের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাবিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোনামণি প্রধান। এদিকে, এই ঘটনা জানতে পেরেই দ্রুততার সাথে সোনামনির বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় অন্যত্র। এমনকি, সোনামনির একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। তবে, বিয়ের পরেও নিজের প্রেমিকের সাথে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। গ্রামের রাস্তায় তাঁদের এক সঙ্গে দেখা যেত বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কিছুদিন আগেই বাপের বাড়িতে আসেন সোনামনি। কিন্তু, শনিবার রাত থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। জানা গিয়েছে যে, পুত্রসন্তানকে বাপের বাড়িতে রেখেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ওই গৃহবধূ। এরপর আর বাড়ি ফেরেন নি তিনি। যদিও, তারপরে দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে অবশেষে রবিবার সকালে সুবোধপুর শ্মশান সংলগ্ন একটি বাবলা গাছে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দু’জনকে দেখতে পান স্থানীয়রা।
এই প্রসঙ্গে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন যে, “ঠিক কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানা নেই। ছেলেটি বিয়ে করেনি কিন্তু মেয়েটি বিবাহিত ছিল। তিন বছরের ছেলেও রয়েছে। সকালেই বিষয়টা জানতে পারি। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।”
এদিকে, এই মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভগবানপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দু’জনের দেহ উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। যদিও উভয়েরই পরিবারের তরফ থেকে এই ঘটনায় কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাতেও।