বাংলা হান্ট ডেস্ক: বছর দশেক আগে হুগলির পুরশুড়া থানার ভাঙামোড়া গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ পালের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মধুমিতা পালের। মধুমিতার পৈতৃক বাড়ি পাণ্ডুয়া থানা এলাকায়। অভিযোগ ওঠে যে, বিয়ের ঠিক পরেই বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মধুমিতাকে মারধর শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শুধু তাই নয়, অকথ্য মানসিক নির্যাতনও চলত তাঁর ওপর। ক্রমশ অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকায় গত বছরের নভেম্বর মাসে পুরশুড়া থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন মধুমিতা। যদিও, পুরশুড়া থানা তাঁকে পাণ্ডুয়া থানায় পাঠালে সেখানেই তিনি তাঁর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ জানান।
কিন্তু, বারংবার দুই থানার দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি কোনো ফল! সুবিচারের আসায় শেষমেশ আদালতের দ্বারস্থ হন মধুমিতা। তবে, সেখানেও উকিলকে দিতে হবে টাকা। এমতাবস্থায়, টাকা জোগাড় করতে কোনো উপায় না পেয়ে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে রক্ত বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি!
সেই সূত্রেই সোমবার তিনি হাজির হন হাসপাতালে। আর্থিক অনটনের জেরে কিভাবে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা লড়বেন এবং কিভাবে তাঁর দুই সন্তানকে বড় করবেন তা নিয়ে কোনো কূলকিনারা খুঁজে না পেয়ে শেষে রক্ত বিক্রির পথকেই বেছে নেন তিনি।
এদিকে, এই ঘটনা জানাজানি হতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। পাশাপাশি, সরকারি হাসপাতালে রক্ত বিক্রিও হয়না। তাই তাঁকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালের কর্মীরা কোনোমতে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেন। তবে, শেষপর্যন্ত মধুমিতা এরপর কোথায় যাবেন বা আদৌ তিনি তাঁর এই লড়াইতে সফল হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।