বিশ্বের বৃহত্তম আইফোন কারখানা জুড়ে লকডাউন, চীনে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠল করোনা

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: করোনা (Corona) কাঁটায় ফের বিধ্বস্ত চিন (China)। এমনকি, এবার বিশ্বের বৃহত্তম iPhone কারখানার আশেপাশে করোনা সংক্রমণ অত্যধিক হারে ছড়িয়ে পড়েছে বলেও জানা গিয়েছে। যে কারণে ওই কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা পালাতে শুরু করেছেন। এমতাবস্থায়, অন্যান্য এলাকায় এই ভয়াবহ সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য চিন ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বৃহত্তম iPhone কারখানা “iPhone City”-র আশেপাশের এলাকায় লকডাউন জারি করেছে চিন। পাশাপাশি, ওই এলাকায় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ আছে বলেও জানা গিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে ব্লুমবার্গ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, চিনা অধিকারিকরা বুধবার বিশ্বের বৃহত্তম iPhone কারখানার আশপাশের এলাকা আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছেন । অর্থাৎ ওই সব এলাকায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট কারখানায় কর্মরত কর্মীরা করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে এবং কঠোর নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সেই স্থান পরিত্যাগ করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন মারফত এই তথ্য সামনে এসেছে। এদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে iPhone-এর সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে সরকার জানিয়েছে যে, ওই অঞ্চলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহন ছাড়া কোনো যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও অনুমতি দেওয়া নেই। শুধু তাই নয়, সেখানকার বাসিন্দারা শুধু করোনা পরীক্ষা ও মেডিকেল ইমার্জেন্সি হলেই বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন। তাই, বাড়ি থেকে বের হওয়ার ওপর সবসময় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। প্রকৃতপক্ষে, এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন গত মঙ্গলবার ঝেংঝু এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫৯-এ পৌঁছে গিয়েছে। সোমবার এই সংখ্যা ছিল ৯৫ তে।

এদিকে, চিনের ঝেংঝুতে Apple-এর iPhone উৎপাদন কেন্দ্রে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী কাজ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, ঝেংঝুতে থাকা এই কারখানাটি Apple -এর iPhone উৎপাদনের বৃহত্তম কেন্দ্র। ফক্সকন প্রায় দু’লক্ষ কর্মী নিয়ে এই প্ল্যান্টটি পরিচালনা করে।

এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানিয়েছেন, ওই কারখানার অ্যাসেম্বলি লাইনে কর্মরত কর্মচারীদের ক্রমাগত সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, কর্মীরা শঙ্কিত হয়ে উৎপাদনের কাজ ছেড়ে দিতে শুরু করেছেন । তবে, ফক্সকনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বহিরাগতদের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই এবং সামগ্রিকভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে “ক্লোজড-লুপ'” পদ্ধতির অবলম্বন করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।

তবে, ফক্সকন মোট সংক্রমিত কর্মীদের সংখ্যা এবং তাঁদের চিকিৎসা সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়নি। যদিও, সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে iPhone উৎপাদন হ্রাসের প্রসঙ্গে ফক্সকন জানিয়েছে যে, এই ধরণের আশঙ্কা দূর করতে তারা অন্যান্য কারখানার সাথে সমন্বয় সাধন করবে। এদিকে, ওই কারখানার ঠিক কতজন শ্রমিক চলে গেছে তা স্পষ্ট না হলেও ঝেংঝু কারখানার শ্রমিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ফোরামে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফক্সকনের ওই কারখানার প্রায় এক লক্ষ কর্মী চলে গিয়েছেন।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর

X