ইট-বালি-সিমেন্ট নয়, নর্দমার পাইপ কেটে তৈরি হোটেল! নামমাত্র খরচেই যাবে থাকা, রয়েছে কোথায়?

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমরা ঘুরতে গেলে সবার আগে দেখি হোটেলের (Hotel) ব্যবস্থা। কারণ সেখানের পরিবেশ থেকে শুরু করে হোটেলের রুম খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা কেমন এগুলো সবার আগে জেনে নেওয়ার জরুরী। বর্তমানে এই উন্নতির যুগে বিভিন্ন ধরনের আলিশান হোটেল তৈরি হয়েছে। তবে আজ এমন একটি হোটেলের খোঁজ দেবো যার কথা হয়তো জীবনেও শোনেন নি। চার দেওয়ালের হোটেল নয়, নর্দমার পাইপ দিয়ে তৈরি হয়েছে হোটেল। কি শুনে গা গুলিয়ে উঠলো তো? তবে বিচার করার আগে জেনে নিন পুরো বিষয়টি।

নর্দমার পাইপ কেটে তৈরি হয়েছে হোটেল (Hotel):

এই গোটা পৃথিবীতে কত রকমের অদ্ভুত জিনিস আছে তা হয়তো আপনারা জানেন না। এমনকি নর্দমার পাইপ দিয়েও যে হোটেল (Hotel) বানানো যায় সে কথাও জানা ছিল না। পর্যটকদের আকর্ষণ করতে, হোটেলের নতুনত্ব স্বাদের খোঁজ দিতে এমন নয়া পদক্ষেপ। তবে নর্দমার পাইপ দিয়ে তৈরি হলেও এই পাইপগুলো নর্দমার কাজে ব্যবহার করা হয়নি। আর পাঁচটি পাঁচতারা হোটেলের মতোই রয়েছে এখানে বিলাসবহুল সুবিধা। রয়েছে চার দেওয়ালের মধ্যে এক মনোরম পরিবেশ। নামে এবং আকৃতিতে শুধু নর্দমার পাইপ, কিন্তু রূপান্তরিত করা হয়েছে ছোট ছোট হোটেল কক্ষের মতো।

The world's strangest hotel made from sewer pipes

কোথায় রয়েছে নর্দমার পাইপ দিয়ে তৈরি হোটেল: জানা গিয়েছে, এমনই অদ্ভুত হোটেল (Hotel) রয়েছে জার্মানিতে। সেখানকার হোটেলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই দাস পার্ক হোটেল। গোটা জার্মানি জুড়ে এমন অভিনব কায়দায় তৈরি কক্ষের বিশাল জনপ্রিয়তা। পরিষ্কার, ঝাঁ চকচকে দৈত্যাকার আকৃতির নর্দমার পাইপ ব্যবহার করে বানানো হয়েছে হোটেলের কামরা। শিল্পী আন্দ্রেয়া স্ট্রসের হাতের ছোঁয়ায় কক্ষের রূপ পেয়েছে পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশনের পাইপগুলি। এগুলিকে বাইরে থেকে দেখতে একদম সাধারন লাগলেও, অসাধারণ অন্দরসজ্জায় সজ্জিত প্রতিটি কক্ষ।

ঠিক কিভাবে সাজানো হয়েছে প্রতিটি কক্ষ: গোল পাইপের সাথে রয়েছে কাঠের দরজা। প্রতিটি কক্ষের দেওয়াল সাজানো রঙিন ছবি দিয়ে। অন্দরসজ্জার পাশাপাশি রয়েছে নরম বিছানা, অত্যাধুনিক আলো, পাখা ইত্যাদির ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, ফোন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র চার্জ দেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে এই ৬ ফুট ব্যাসের পাইপে। তবে পাইপ গড়িয়ে যাওয়ার চিন্তার কোন কারণ নেই। এই পাইপের যা ওজন তা সহজে গড়িয়ে যাওয়ার নয়। নিশ্চিন্তে আপনি এই হোটেলে থাকতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ১০ ডিগ্রিতে নামবে তাপমাত্রা! কাল ফের বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে? আবহাওয়ার আগাম খবর

প্রসঙ্গত জার্মানি ছাড়াও কলম্বিয়া এবং মেক্সিকোতেও এমন ধারার হোটেল (Hotel) রয়েছে। সূত্র মারফত জানা যায়, ২০১০ সালের নাগাদ এখানে এই হোটেলগুলি চালু করা হয়, যার নাম “টিউবোহোটেল”। তবে জার্মানির দাস পার্কের হোটেলগুলি তুলনায় এর আকার, আকৃতি একেবারেই অন্যরকম। এখানকার হোটেলগুলি ত্রিভুজাকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে। দুটি পাইপের উপর আরেকটি পাইপ বসিয়ে এই আকৃতি আনা হয়েছে। কাঁচের দরজা, লোহার সিঁড়ি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হোটেলগুলো।

আরও পড়ুনঃ DA নিয়ে ক্ষোভ অতীত! এবার বিরাট কাণ্ড ঘটাতে চলেছে শিক্ষক সংগঠন, কাঁপবে বাংলা!

মেক্সিকো সিটি থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত টেপোজল্টান গ্রাম, সেখানেই রয়েছে এই হোটেল। এখানকার আবার ওয়াইফাইয়েরও সুবিধা দেওয়া রয়েছে। কিন্তু সব জায়গায় সমস্যা একটাই শৌচালয়ের। গোল পাইপের মধ্যে শৌচালয়ের ব্যবস্থা করাটা দুষ্কর। সবথেকে আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে এখানে ভাড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন মূল্য নির্ধারণ করা নেই। হোটেল থেকে বেরোনোর আগে নিজের ইচ্ছেমতো যে টাকা দেবেন সেই টাকাই রেখে দেবে হোটেলের মালিক। অর্থাৎ বর্তমানের এই দুর্লভ মূল্যের এই বাজারে দাঁড়িয়ে এমন সাশ্রয়ী হোটেল (Hotel) সত্যিই পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।

Sunanda Manna
Sunanda Manna

সুনন্দা মান্না, বাংলা হান্টের স্ক্রিপ্ট রাইটার। গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতা করার পর থেকেই সংবাদ মাধ্যমে কাজ শুরু। দেশ থেকে বিদেশ, রাজনীতি, বিনোদন বিভিন্ন তথ্যই আপনাদের কাছে তুলে দেওয়া আমার মূল লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর