বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এল উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) আলিগড় (Aligarh) থেকে। এমনকি, এই ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে পুলিশেরও। জানা গিয়েছে, এক কিশোরীকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় গত ৭ বছর যাবৎ জেল খাটছিলেন এক যুবক। কিন্তু, সেই মেয়েটিকেই এবার “জীবিত” অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গেল। এমনকি, ওই ঘটনায় পুলিশ জানতে পারে যে, ওই মেয়েটি বর্তমানে তাঁর স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে হাতরাস গেট এলাকায় বসবাস করত।
এমতাবস্থায়, তাকে দ্রুত আটক করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এদিকে, জেলে আটক থাকা বিষ্ণু নামের ওই যুবকের মা এখন সঠিক বিচারের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সম্প্রতি গোন্ডার ঢানথলি গ্রামের বাসিন্দা অনিতা দেবী বৃন্দাবনের এক ভাগবতাচার্যকে সাথে নিয়ে এসএসপি-র সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে তিনি জানান, গ্রামের এক মেয়েকে অপহরণ করে হত্যার দায়ে তাঁর নির্দোষ ছেলেকে জেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই মেয়েটি বেঁচে আছে এবং স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসারও করছে। এমতাবস্থায় এসএসপির নির্দেশে পুলিশ এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় এবং অভিযুক্ত তরুণীকে গ্রেফতার করে।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গোন্ডা থানায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। এমতাবস্থায়, এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে ওই গ্রামেরই যুবক বিষ্ণুর ওপর সন্দেহ করতে শুরু করে সবাই। তবে কয়েক মাস তদন্ত করেও ওই নাবালিকার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঠিক সেই সময়ে আগ্রায় একটি মেয়ের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এমতাবস্থায়, তার শরীরে থাকা পোশাকের ভিত্তিতে নিখোঁজ নাবালিকার বাবা ওই মৃতদেহটিকে তার মেয়ের দেহ বলে শনাক্ত করেন এবং বিষ্ণুই এই হত্যা করেছে বলে অভিযোগ জানান। যার ফলে ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, পুলিশ বিষ্ণুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এবং ওই কিশোরীকে ফুঁসলিয়ে তাকে হত্যা এবং প্রমাণ মুছে ফেলার অভিযোগে তাঁর জেলও হয়।
তরুণীর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ: এদিকে, কয়েকদিনের জন্য জামিনে বেরিয়ে আসেন বিষ্ণু। কিন্তু আদালতে মামলার বিচার শেষে তাঁকে আবারও জেলে যেতে হয়। তবে, বিষ্ণুর পরিবার নিখোঁজ মেয়েটির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে এবং জানতে পারে মেয়েটি বেঁচে আছে। এমতাবস্থায়, অভিযোগ উঠেছে যে, পরে ওই মেয়েটির পরিবার বিষ্ণুর মা অনিতা দেবীকে একটি সমঝোতার জন্য চাপ দিতে থাকে। যদিও, পরবর্তীকালে বিষ্ণুর মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ ওই তরুণীকে আটক করে আদালতে হাজির করে।
ছেলের জন্য সঠিক বিচার চেয়েছেন মা: এই প্রসঙ্গে বিষ্ণুর মা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এখন এই বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এছাড়াও, তাঁর ছেলেকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি, এই ঘটনায় গোন্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর উমেশ শর্মা জানিয়েছেন যে, পুলিশ আসল সত্যের সন্ধানে তদন্ত করছে। আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করার পরই ওই যুবক জেল থেকে ছাড়া পেতে পারেন। এছাড়াও, এই বিষয়ে আইনগত দিকে নজর রাখার পাশাপাশি উপযুক্ত তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।