বাংলা হান্ট ডেস্ক: দিনের পর দিন দেওয়া হত স্নানের গোপন ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি। এমনকি, প্রতিবাদ করলে জুটত মারধরও। এমতাবস্থায়, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন এক তরুণী। রীতিমত চরম অপমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার পাথুরিয়া গির্জা এলাকায়। মৃতার নাম মৌসুমী সরকার। এদিকে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তরুণীর প্রেমিক সাউমিন খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঠিক কি ঘটেছে?
জানা গিয়েছে যে, সাউমিন ও মৌসুমীর বাবা কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন। যার ফলে দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল। এমতাবস্থায়, বছর বাইশের মৌসুমীর সঙ্গে সাউমিন খানের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। যদিও, বর্তমানে মৌসুমী মায়ের সঙ্গে পাথুরিয়ার বাড়িতে থাকতেন। এদিকে, তাঁদের এই প্রেমের সম্পর্ক পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন।
পাশাপাশি তরুণীর পরিবার অভিযোগ জানিয়েছেন যে, সাউমিনের পরিবারের লোকেরা মৌসুমীর উপর মানসিক অত্যাচার করত। যে কারণে বেশ কয়েকদিন যাবৎ মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন মৌসুমী। শুধু তাই নয়, মৌসুমীর দিদি জানিয়েছেন, বোনের স্নান করার গোপন ভিডিও করে রেখেছিল সাউমিন।
সেটা নিয়েই মৌসুমীকে “ব্ল্যাক মেল” করত ওই যুবক। এমনকি, জোর করে প্রেমের সম্পর্কও তৈরি করে সে। এমতাবস্থায়, মৌসুমী সেই সম্পর্কে জড়াতে না চাওয়ায় চলত মারধর এবং অত্যাচার। এদিকে, স্নানের ভিডিও ভাইরাল করার হুমকিও দিত সাউমিন। আর তারপরেই গত সোমবার চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মৌসুমী।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে মৌসুমীর মা রান্না করছিলেন। সেসময় তাঁর ঘরে একাই ছিলেন তিনি। সেখানেই হঠাৎ বাড়িতে কর্মরত রাজমিস্ত্রী তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। এদিকে, তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে ঘর থেকে গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।
তারপরে তাঁকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে। যদিও, সেখানে চিকিৎসকরা জানান মৃত্যু হয়েছে মৌসুমীর। এই প্রসঙ্গে তাঁর মা জানিয়েছেন, “আমার মেয়ের সঙ্গে সুন্দরপুরের ওই যুবক প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। তার বাবা-মা নিয়মিত অপমান করত মেয়েকে। কিছুদিন আগে ওই যুবক আমার মেয়েকে মারধর করেছিল।”
এদিকে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বাগদা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এমনকি, বুধবার গভীর রাতে অভিযুক্ত প্রেমিক সাউমিন খানকে গ্রেপ্তারও করা হয়। মৃতার ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, প্রেমঘটিত কারণেই আত্মহত্যা করেছেন মৌসুমী। এদিকে, এই ঘটনার ফলে স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।