বাংলা হান্ট ডেস্ক: সঠিকভাবে চাকরি পাওয়ার জন্য সমস্ত যোগ্যতাই রয়েছে তাঁর। এমনকি কলেজ শিক্ষক হওয়ার জন্য শত বাধাকে উপেক্ষা করেই একের পর এক শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন করেছেন তিনি। কিন্তু, চাকরি কোথায়? এমনিতেই আমাদের রাজ্যে একের পর এক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সামনে আসছে। যেখানে পরীক্ষায় পাশ করেও যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ঠিক সেই আবহেই সামনে এল জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ধূপগুড়ির এক মেধাবী যুবকের প্রসঙ্গ।
যিনি চরম দারিদ্রতার মধ্যেও কলেজ শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এমনকি, সেই স্বপ্নপূরণের জন্য প্রথমে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে MA পাশ করার পর স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্টও (SET) পাশ করে যান। যদিও, চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় তাঁর। এমনকি, উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত এলাকায় টিউশন পড়িয়ে কোনোমতে রোজগারের চেষ্টা করলেও দিন গুজরানের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।
এমতাবস্থায়, একপ্রকার পেটের টানেই কেরলের হোটেলে ঝাঁট দেওয়ার কাজ শুরু করেন ওই যুবক। আর এই ঘটনাই আমাদের রাজ্যে বেকারত্বের যন্ত্রণাকে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, একদম ছোটবেলাতেই বাবা ও মা-কে হারিয়েছিলেন ওই যুবক। দাদার চেষ্টাতেই কোনোমতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। এমতাবস্থায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে MA পাশ করার পর ২০১৯ সালে সেট পাশ করেন ওই যুবক।
যদিও, চাকরি না পেয়ে একটা সময়ে টিউশন পড়াতে শুরু করলেও তাতে যথেষ্ট উপার্জন হচ্ছিল না তাঁর। মূলত, ওই প্রত্যন্ত এলাকায় গৃহশিক্ষককে টাকা দেওয়ার মত অবস্থাই ছিল না অনেকের। আর সেই কারণে গৃহশিক্ষকতার কাজও করতে পারেন নি তিনি। যার ফলে মজুরের কাজও করতে হয় তাঁকে।
তারপরেই কেরলের একটি হোটেলে পরিষ্কার করা ও ঝাঁট দেওয়ার কাজ নিয়ে তিনি পাড়ি দেন ভিনরাজ্যের উদ্দেশ্যে। যদিও, সেখানেও কাজের অবসরে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। এমতাবস্থায়, হঠাৎই তিনি খবর পান যে, কলেজের ইন্টারভিউতে ডাক এসেছে তাঁর। তারপরে বাড়িতে ফিরে ইন্টারভিউ দিয়ে তিনি ফের ফিরে গেলেন হোটেলে পরিষ্কারের কাজে। কারণ, উপার্জন বন্ধ করে অপেক্ষা করলেই যে ফের টান পড়বে পেটে!